Gallery

Breaking

Thursday 23 January 2020

রক্তে আমার অনাদি অস্থি

কবিতার ব্যাখ্যাঃরক্তে আমার অনাদি অস্থি


 কবিতা - রক্তে আমার অনাদি অস্থি

কবি - দিলওয়ার

" পদ্মা তোমার যৌবন চাই / যমুনা তোমার প্রেম
সুরমা তোমার কাজল বুকের / পলিতে গলিত হেম "
এখানে কবি সাধারণ জনগনের একজন শিল্পী হিসেবে নিজের প্রতিশ্রুতি পূরণ করার লক্ষ্যে কবিতায় উল্লেখ কিছু বাংলার নদীগুলোর কাছে থেকে দোয়া চাচ্ছেন
এখানে তিনি পদ্মার কাছে থেকে তার যৌবন চাচ্ছেন তারপর যমুনার কাছে প্রেম।এরপর সুরমার কাছে যেটা চেয়েছেন তা হল পলিমাটি।কারণ এই পলিমাটি আমাদের জন্য খুব মুল্যবান কারণ নদীর স্রোতের সাথে সাথে ঘেঁষে এই মাটি আসে,আমাদের গ্রাম বাংলায় এই মাটির ফলেই খুব উর্বর এবং অনেক ফসল হয়ে থাকে।
এই লাইন টুকুতে তিনি নদীর কাছ থেকে যৌবন,প্রেম আর গলিত পলিমাটি প্রার্থনা করেছেন।
" পদ্মা যমুনা সুরমা মেঘনা
গঙ্গা কর্নফুলী,
তোমাদের বুকে আমি নিরবধি
গনমানবের তুলি "
আমাদের দেশে এই নদীগুলো কিন্তু নিরন্তর বয়ে চলছে তাই না!
আমরা যারা শহরে থাকি তাদের এই নদী বেশি গুরুত্ত রাখেনা কিন্তু আমাদের গ্রাম বাংলার অবয়ব ও জীবনীশক্তি দান করাতে এই নদীগুলো অনেক ভুমিকা রাখে।আমাদের এই কবিই গণশিল্পীর তুলি হাতে সেই বিচিত্র জীবনেরই একজন রুপকার
" রেখেছি আমার প্রাণ সপ্নকে /বঙ্গোপসাগরেই ভয়াল গুর্নি সে আমার ক্রোধ / উপমা যে তার নেই "
কবির কাছে একটি স্বপ্ন আছে যেটা তিনি আমানত রেখেছেন শক্তিশালী বঙ্গোপসাগরের কাছে।কারণ পদ্মা যমুনা সুরমা মেঘনা নদীর স্রোতের শক্তি গিয়ে মিলিত হয় বঙ্গোপসাগরে আর সবার শক্তি মিলে মিশে হয়ে ভয়াল জল্রাশির মতো কবির ক্রোধকে আরও শক্তিশালী করেছে।
বুঝতে পেরেছত? যদি না বুঝে থাক কমেন্ট এ জানিও।
" এই ক্রোধের জ্বলে আমার স্বজন / গনমানবের বুকে -
যখন বোঝাই প্রাণের জাহাজ / নরদানবের মুখে "
একটা কথা কবি খুব ভালোভাবে জানতেন যে বিদেশি মানুষরুপি কিছু দানব আছে যারা এই দেশে এসে অত্যাচার নিপীড়ন হত্যা চালায়।তাদের বিরুদ্ধে ক্রোধে কবি ফুঁসে ওঠেন।এই ক্রোধের কারণে নরপশুরা কবিকে দমাতে ব্যর্থ হয়।
" পদ্মা সুরমা মেঘনা যমুনা.../অশেষ নদী ও ঢেউ
রক্তে আমার অনাদি অস্থি , / বিদেহসে জানেনা কেউ "

এই লাইনটি শুনলেই খুব ভালো ফিলিংস আসে।এর কারণ কি জানো?
যখন তোমাকে কেউ থ্রেট দেয়  কিন্ততু তুমি ভয় পাচ্ছনা কারণ তোমার কাছে  অনেক শক্তি আছে যেটা ও জানেনা।
এই কথাটি কবি বিদেশি সেই নরপধুদের উদ্দেশ্য বলছেন যারা জানেনা আমাদের বাংলার মানুষের কাছে ও কবির কাছে কত শক্তি আছে। 
আর এই শক্তি কিন্তু কোন সুপার পাওয়ার না।এটা হচ্ছে আমাদের তিব্র প্রতিবাদ করার শক্তি।আমরা তিব্র প্রতিবাদ করতে জানিনা এবং আমাদের এই প্রতিবাদ দানবদের পরাজিত করতে যথেষ্ট।


কবি পরিচিতি
-------------------
দিলওয়ার ১৯৩৭ খ্রিস্টাব্দের পহেলা জানুয়ারি সিলেট শহরসংলগ্ন সুরমা নদীর দক্ষিণ তীরবর্তী ভার্থখলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পুরো নাম দিলওয়ার খান। কবি-জীবনের শুরু থেকেই তিনি জনমনের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে পারিবারিক ‘খান’ পদবি বর্জন করেন। তাঁর পিতার নাম মৌলভী মোহাম্মদ হাসান খান, জননী রহিমুন্নেসা। দিলওয়ার সাধারণ্যে ‘গণমানুষের কবি’ হিসেবে সমধিক পরিচিত। পেশা জীবনে প্রথমে দুমাস শিক্ষকতা করলেও ১৯৬৭ খ্রিস্টাব্দে ‘দৈনিক সাংবাদ’ পত্রিকায় এবং ১৯৭৩-৭৪ খ্রিস্টাব্দে দৈনিক গণকণ্ঠে’ সহকারী সম্পাদক হিসেবে তিনি কাজ করেন। কিন্তু স্বাস্থ্যগত কারণে ওই পেশা তাঁকে পরিত্যাগ করতে হয়। তিনি ছিলেন মূলত সার্বক্ষণিক কবি, লেখক ও ছড়াকার। তাঁর কবিতার মূলসুর দেশ, মাটি ও মানুষের প্রতি আস্থা ও দায়বদ্ধতা। গণমানবের মুক্তি তাঁর লক্ষ্য; বিভেদমুক্ত কল্যাণী পৃথিবীর তিনি স্বাপ্নিক। তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘জিজ্ঞাসা’ প্রকাশিত হয় ১৯৫৩ খ্রিস্টাব্দে। তাঁর প্রকাশিত অন্যান্য কাব্যগ্রন্থ ‘ঐকতান’, ‘উদ্ভিন্ন উল্লাস’, ‘স্বনিষ্ঠ সনেট’, ‘রক্তে আমার অনাদি অস্থি’, ‘সপৃথিবী রইবে সজীব’, ‘দুই মেরু দুই ডানা’, ‘অনতীত পঙ্ক্তিমালা’ তাঁর প্রবন্ধগ্রন্থ : ‘বাংলাদেশ জন্ম না নিলে’। ছড়াগ্রন্থ: দিলওয়ারের শতছড়া’, ‘ছড়ায় অ আ ক খ’। সাহিত্য সাধনার স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি লাভ করেছেন বাংলা একাডেমি পুরস্কার ও ‘একুশে পদক’।
.
কবি দিলওয়ার ২০১৩ খ্রিস্টাব্দের ১০ই অক্টোচর মৃত্যুবরণ করেন।



 পাঠ-পরিচিতি

‘রক্তে আমার অনাদি অস্থি’ কবিতাটি কবির একই নামের কাব্যগ্রন্থের নাম-কবিতা। ‘রক্তে আমার অনাদি অস্থি’ ১৯৮১ খ্রিস্টাব্দে সিলেট থেকে প্রথম প্রকাশিত হয়। সংকলিত কবিতাটি কবির চৌধুরীর উদ্দেশ্যে উৎসর্গিত। ‘রক্তে আমার অনাদি অস্থি’ কবিতায় দিলওয়ার সাগরদুহিতা ও নদীমাতৃক বাংলাদেশের বন্দনা করেছেন এবং গণমানবের শিল্পী হিসেবে নিজের প্রত্যয় ও প্রতিশ্রুতি ঘোষণা করেছেন। কবি বলেছেন, এই বাংলায় জীবনরূপ যেসব নিরন্তর বয়ে চলেছে, গণশিল্পীর তুলি হাতে সেই বিচিত্র জীবনেরই তিনি রূপকার। তবে বহমান জীবন এখানে বাধাহীন নয়। প্রবহমান নদীর বাঁকে বাঁকে পাতা রয়েছে মৃত্যুর ফাঁদ। কিন্তু কবি একথা জানতে ভোলেন না যে, তিনি তাঁর স্বপ্নকে বিশাল বঙ্গোপসাগরের শক্তির কাছে আমানত রেখেছেন। এই শক্তিই সাগরের ঘূর্ণ্যমান ভয়াল জলরাশির মতো তাঁর ক্রোধকে শক্তিমান করেছে। আর এই ক্রোধ কেবল কবির একার নয়, সমগ্র জনগোষ্ঠীর সম্পদে পরিণত হয়েছে। এ কারণে বিদেশি নরদানবের আগ্রাসন এ জনগোষ্ঠীকে দমাতে পারে না। বিদেশিরা হয়ত জানে না যে, আবহমান ছুটে চলা নদীর মতোই 
কবি নিজের অস্তিত্বে ধারণ করে আছেন ওই জাতি সত্তার শোনিত ও অস্থি।
কবিতাটি ছয় মাত্রার মাত্রাবৃত্ত ছন্দে রচিত। প্রতি পঙ্ক্তি ৬+৬ মাত্রার পূর্ণপর্বে এবং ২ মাত্রার অপূর্ণ পর্বে বিন্যস্ত।

গুরুত্বপূর্ণ McQ


 ১। কবি দিলওয়ার কোন নদীর তীরবর্তী ভার্থখলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন?

ক) কুশিয়ারা               খ) রূপলাল

গ) কর্ণফুলী                ঘ) সুরমা

২। কবি দিলওয়ার পারিবারিক কোন পদবি বর্জন করেন?

ক) হক               খ) আকন্দ

গ) মিয়া              ঘ) খান

৩। কবি দিলওয়ার সাধারণ মানুষের কাছে কী কবি হিসেবে সমধিক পরিচিত?

ক) বিদ্রোহী             খ) প্রেমের

গ) যুগ-সন্ধিক্ষণের    ঘ) গণমানুষের

৪। কবি দিলওয়ার কত খ্রিস্টাব্দে ‘দৈনিক গণকণ্ঠ’ পত্রিকায় চাকরি করেন?

ক) ১৯৭৩-৭৪    খ) ১৯৭৪-৭৫

গ) ১৯৭৫-৭৬    ঘ) ১৯৭৬-৭৭

৫। ‘বাংলাদেশ জন্ম না নিলে’ কোন ধরনের গ্রন্থ?

ক) কাব্যগন্থ                                            খ) উপন্যাস

গ) প্রবন্ধ                                                 ঘ) গবেষণা গ্রন্থ

৬। বিভিন্ন নদীর বুকে কবি দিলওয়ার নিরবধি কী হতে চেয়েছেন?

ক) চঞ্চল                                                খ) গণমানুষের তুলি

গ) বন্যা                                                  ঘ) পলিমাটি

৭। কবি দিলওয়ারের কী ভয়াল ঘুর্ণি?

ক) বিদ্বেষ                                               খ) ক্রোধ

গ) রাগ                                                   ঘ) অভিমান

৮। ‘হেম’ শব্দের অর্থ কী?

ক) সোনা                                               খ) রূপা

গ) পিতল                                                ঘ) সিসা

৯। ‘অস্থি’ শব্দের অর্থ কী?

ক) গাছ                                                      খ) সোনা

গ) হাড়                                                   ঘ) চেতনা

১০। ‘রক্তে আমার অনাদি অস্থি’ প্রথম কত খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত হয়?

ক) ১৯৭৯          খ) ১৯৮০

গ) ১৯৮১          ঘ) ১৯৮২

১১। প্রবহমান নদীর বাঁকে বাঁকে কী পাতা রয়েছে?

ক) স্বপ্ন                                                      খ) সুযোগ

গ) মৃত্যুর ফাঁদ                                          ঘ) ভালোবাসা

১২। ‘রক্তে আমার অনাদি অস্থি’ কবিতাটি কোন ছন্দে রচিত?

ক) অক্ষরবৃত্ত                                           খ) মাত্রাবৃত্ত

গ) পয়ার                                                ঘ) অর্ধমাত্রাবৃত্ত

১৩। ‘গণমানুষের কবি’ বলতে বোঝায়—

ক) জনগণের কবি

খ) সমাজতন্ত্রের কবি

গ) চেতনাদীপ্ত কবি                                    ঘ) শ্রমিকদের কবি

১৪।‘মুগ্ধ মরণ বাঁকে বাঁকে ঘুরে-কাটায় মারণ বেলা’—চরণটিতে কোন বিষয়ের প্রতি ইঙ্গিত দিয়েছেন কবি দিলওয়ার?

ক) বিপদসংকুল    খ) সচেতনতা

গ) নির্ভীকতা        ঘ) সাহসী

১৫। কবি দিলওয়ার কত সালে মৃত্যুবরণ করেন?

ক) ২০১১     খ) ২০১২

গ) ২০১৩     ঘ) ২০১৪

১৬। কবি দিলওয়ার কিসের উপমা নেই বলেছেন?

ক) রাত্রির                                               খ) ক্রোধের

গ) বিলাসিতার                                         ঘ) ভালোবাসার

১৭। পেশা জীবনে কবি দিলওয়ার কত মাস শিক্ষকতা করেন?

ক) এক                                                                       খ) দুই

গ) তিন                                                                      ঘ) চার

১৮। ‘গণমানব’ বলতে বোঝানো হয়েছে—

ক) সামন্তবাদী জনগণ                               

খ) প্রান্তিক জনগণ

গ) পুঁজিবাদী জনগণ                                 

ঘ) স্বার্থবাদী জনগণ

১৯। বহমান জীবন এখানে বাধাহীন নয় কেন?

ক) পরিবর্তনশীল হওয়ায়                           

খ) অনুভূতি থাকায়

গ) সভ্যতার গতির খেলায়                          

ঘ) প্রত্যাশিত স্বপ্ন পূরণ হওয়ায়

২০। কবি দিলওয়ার যমুনা নদীর কাছে কী চেয়েছেন?

ক) যৌবন                খ) পবিত্রতা

গ) প্রেম                   ঘ) বিশ্বস্ততা

২১। কবি দিলওয়ারের ক্রোধ জলরাশির মতো শক্তিমান হয়েছে কেন?

ক) দাসত্ব থেকে মুক্তি পাওয়ার চেষ্টায়

খ) অনেক দিনের সঞ্চিত হওয়ায়

গ) শত্রুর মোকাবিলা করায়

ঘ) পরাজয়ের প্রতিশোধ নেওয়ায়

২২। কবি দিলওয়ারের বংশগত পদবি হিসাবে গ্রহণযোগ্য নিচের কোনটি?

ক) খান                                                      খ) মিয়া

গ) আকন্দ                                               ঘ) হক

২৩।‘অনতীত পঙিক্তমালা’ কাব্যগ্রন্থটি নিচের কোন কবির রচনা বলে সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য?

ক) দিলওয়ার                                          খ) আহসান হাবীব

গ) আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ                         ঘ) সৈয়দ শামসুল হক

২৪। সিলেট শহরের নদী হিসেবে গ্রহণযোগ্য নিচের কোনটি?

ক) সুরমা           খ) কুশিয়ারা

গ) কর্ণফুলী         ঘ) যমুনা

২৫। ‘নদীমাতৃক এই বাংলার পরতে পরতে রয়েছে সৌন্দর্য। চরণটির সাথে তোমার পঠিত কোন রচনার মিল রয়েছে?

ক) আমি কিংবদন্তীর কথা বলছি

খ) সেই অস্ত্র

গ) নূরলদীনের কথা মনে পড়ে যায়

ঘ) রক্তে আমার অনাদি অস্থি

১ঘ২.ঘ৩ঘ৪.ক৫.গ৬.খ৭.খ৮.ক

৯.গ১০১১.গ১২খ১৩.ক১৪.

ক১৫.গ১৬.খ১৭.খ১৮খ১৯.ক২০২১ক২২ক২৩.ক২৪ক২৫.ঘ

No comments: