কবিতার ব্যাখ্যাঃ লোক-লোকান্তর
কবিতাটি বুঝার জন্য, তোমাদের কল্পনার রাজ্যে প্রবেশ করতে হবে। প্রতিটি লাইন
পড়বা, আর মনের ভেতর ছবি এঁকে কল্পনা করবা। দু-একজন কল্পনা করেনি, তারা আজ
এই কবিতা না বুঝে মুখস্থ করে।
তাহলে চলো, শুরু করি। কবিতার মূলভাবটা শুরুতেই বলে নেই। তাহলে তোমাদের জন্য অনেকটা ইজি হয়ে যাবে।
মূলকথাঃ
কবি এখানে তার কবিতার জয়গাথা তুলে ধরেছেন। কবি শুরুতেই তার কবিতাকে একটা "শাদা সত্যিকার পাখি"র সিম্বল এ তুলে ধরেন। যার সবকিছুতেই যেন বাঙলা প্রকৃতির ছাপ।
কবি দৃঢ়কন্ঠে নিজের কাব্যদর্শন এর গুরুত্ব তুলে ধরেছেন। তিনি জানেন, তার কাব্যরচনার পথ মসৃণ নয়। এখানে রয়েছে বিচিত্র টানাপোড়েন ও জীবন-সংগ্রাম। এতদসত্ত্বেও একটা সময় সকল নিয়মকানুন, সকল বাধাবিপত্তিকে তুচ্ছজ্ঞান করে জয় হয় কবিতার। কবি আহত হন, তাতে কি! তার কাছে তার কবিতার জয়ই মুখ্য।
এবার শুরু হবে, লাইন বাই লাইন এক্সপ্লেনেশন:
★>> আমার চেতনা যেন একটি শাদা সত্যিকার পাখি,
বসে আছে সবুজ অরণ্যে এক চন্দনের ডালে; <<
ব্যাখা:- কবি এখানে তার কবিতাসত্ত্বাকে একটি সাদা পাখির উপমায় প্রকাশ করেছেন, যে কিনা সবুজ বনের এক চন্দন গাছের ডালে বসে আছে।
★>> মাথার উপরে নিচে বনচারী বাতাসের তালে
দোলে বন্য পানলতা, সুগন্ধ পরাগে মাখামাখি
হয়ে আছে ঠোঁট তার। <<
ব্যাখা:- সেই সাদা পাখিটির উপরে নিচে রয়েছে বন্য পানলতা। যখন বনের মধ্য দিয়ে বাতাস প্রবাহিত হয়, তখন সেই পানলতাগুলো দোল খায়। আর পাখিটির ঠোঁট পরাগে মাখামাখি → এটা দ্বারা বোঝা যায়, যে পাখিটি ফুলের পরাগায়ন করে এসেছে।
★>> আর দুটি চোখের কোটরে
কাটা সুপারির রঙ, পা সবুজ, নখ তীব্র লাল
যেন তার তন্ত্রে মন্ত্রে ভরে আছে চন্দনের ডাল <<
ব্যাখা:- কবির অস্তিত্ব জুড়ে চিরায়ত গ্রামবাংলার প্রতিচ্ছবি। তার কাব্যিক দৃষ্টিতে কাটা সুপারির রঙ। পা সবুজ বলতে বাংলার সুজলা-সুফলা, শস্য শ্যামলা মাঠকে বুঝানো হয়েছে। আর নখ তীব্র লাল বলতে আকাশের রক্তরাঙা অরুণ আভাকে বুঝানো হয়েছে। অর্থাৎ, মাটি থেকে আকাশে মেলে ধরা বাংলা প্রকৃতির নৈসর্গিক সৌন্দর্য প্রকাশ পেয়েছে কবির কাব্যের মাধ্যমে, কাব্যচেতনার মাধ্যমে।
আরেকটা ব্যাপার। চন্দন হল সুগন্ধি কাঠের গাছ। আর এর ফুল হল, লবঙ্গ (ঝাল-মিষ্টি স্বাদযুক্ত)। এখানে কবি তার কাব্যিক সত্তার বা কবিতাচেতনার মধুরতাকে চন্দনের ডালের সাথে তুলনা করেছেন।
★>> চোখ যে রাখতে নারি এত বন্য ঝোপের ওপরে।
তাকাতে পারি না আমি রূপে তার যেন এত ভয় <<
ব্যাখা:- বাংলা প্রকৃতির সৌন্দর্য কবিকে এতটাই মুগ্ধ করেছে, যে কবির কাব্যচেতনা হয়েছে আরো শক্তিমান। তাই কবি যেন তাকাতে পারেন না ঝোপের ওপরে থাকা পাখিটির দিকে। তার রুপ যেন তাক লাগিয়ে দিয়েছে কবিকে।
★>> যখনি উজ্জ্বল হয় আমার এ চেতনার মণি,
মনে হয় কেটে যাবে, ছিঁড়ে যাবে সমস্ত বাঁধুনি
সংসার সমাজ ধর্ম তুচ্ছ হয়ে যাবে লোকালয়। <<
ব্যাখা:- সৃষ্টির প্রেরণায় কবি চিরকালই উদ্বুদ্ধ হন, উজ্জ্বল হয় তাঁর চেতনার মণি। পৃথিবীর কোনো বিধিবিধান, ধর্মীয় নিয়মকানুন বা লোকালয় তাকে তখন দমিয়ে রাখতে পারে না। তখন সবকিছুই তুচ্ছ হয়ে যায়, এবং কবির কাছে একমাত্র সত্য হয়ে উঠে → চেতনার জগৎ। যে জগৎ তিনি গড়ে তোলেন শব্দ দিয়ে। এখানে এক সুগভীর বিচ্ছিন্নতাবোধ কবিকে আহত করে।
★>> লোক থেকে লোকান্তরে আমি যেন স্তব্ধ হয়ে শুনি
আহত কবির গান। কবিতার আসন্ন বিজয়। <<
ব্যাখা:- "লোক" মানে ইহজগৎ, আর "লোকান্তর" শব্দটির দ্বারা পরজগৎ কে বুঝানো হয়েছে।
কবি বুঝিয়েছেন, কবি সকল প্রকার জীবন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে গিয়েও নিজের কবিতার সার্বভৌমত্ব অর্জন করেন। তাইতো তিনি এ জগৎ থেকে পরবর্তী জগতেও তার কবিতার জয়গান শুনতে পান। তার সৃষ্টিকর্মের বিজয় ই তার বিচ্ছিন্নতাবোধের বেদনাকে প্রশমিত করে।
‘লোক-লোকান্তর’ কবির আত্মপরিচিতিমূলক কবিতা। বাস্তব জগতের বিরুদ্ধে পরিবেশের চরে কবি আহত হয়েছেন। তাই তাঁর চেতনার শান্তিকামী পাখিটি লোকালয় থেকে দূরে প্রকৃতির নিবিড় জগতে উড়ে চলে যায়। সেখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য তাকে কবিতাসৃষ্টির প্রেরণায় উদ্বুদ্ধ করে। তাছাড়া তাঁর চোখে, চেতনায়, সর্বাঙ্গে বাংলার গ্রাম ও স্বাধীনতার ভাব মিশে আছে। বাস্তবতার চরে আহত পাখিটি সেখানে গান-কবিতার সুনিশ্চিত বিজয় লক্ষ্য করে, লোক থেকে লোকান্তরে গান গেয়ে যেতে চায়। ওইপ্রকৃতির জগৎটি প্রকৃতপক্ষে কবির অনিষ্ট সাহিত্যের জগৎ।
তাহলে চলো, শুরু করি। কবিতার মূলভাবটা শুরুতেই বলে নেই। তাহলে তোমাদের জন্য অনেকটা ইজি হয়ে যাবে।
মূলকথাঃ
কবি এখানে তার কবিতার জয়গাথা তুলে ধরেছেন। কবি শুরুতেই তার কবিতাকে একটা "শাদা সত্যিকার পাখি"র সিম্বল এ তুলে ধরেন। যার সবকিছুতেই যেন বাঙলা প্রকৃতির ছাপ।
কবি দৃঢ়কন্ঠে নিজের কাব্যদর্শন এর গুরুত্ব তুলে ধরেছেন। তিনি জানেন, তার কাব্যরচনার পথ মসৃণ নয়। এখানে রয়েছে বিচিত্র টানাপোড়েন ও জীবন-সংগ্রাম। এতদসত্ত্বেও একটা সময় সকল নিয়মকানুন, সকল বাধাবিপত্তিকে তুচ্ছজ্ঞান করে জয় হয় কবিতার। কবি আহত হন, তাতে কি! তার কাছে তার কবিতার জয়ই মুখ্য।
এবার শুরু হবে, লাইন বাই লাইন এক্সপ্লেনেশন:
★>> আমার চেতনা যেন একটি শাদা সত্যিকার পাখি,
বসে আছে সবুজ অরণ্যে এক চন্দনের ডালে; <<
ব্যাখা:- কবি এখানে তার কবিতাসত্ত্বাকে একটি সাদা পাখির উপমায় প্রকাশ করেছেন, যে কিনা সবুজ বনের এক চন্দন গাছের ডালে বসে আছে।
★>> মাথার উপরে নিচে বনচারী বাতাসের তালে
দোলে বন্য পানলতা, সুগন্ধ পরাগে মাখামাখি
হয়ে আছে ঠোঁট তার। <<
ব্যাখা:- সেই সাদা পাখিটির উপরে নিচে রয়েছে বন্য পানলতা। যখন বনের মধ্য দিয়ে বাতাস প্রবাহিত হয়, তখন সেই পানলতাগুলো দোল খায়। আর পাখিটির ঠোঁট পরাগে মাখামাখি → এটা দ্বারা বোঝা যায়, যে পাখিটি ফুলের পরাগায়ন করে এসেছে।
★>> আর দুটি চোখের কোটরে
কাটা সুপারির রঙ, পা সবুজ, নখ তীব্র লাল
যেন তার তন্ত্রে মন্ত্রে ভরে আছে চন্দনের ডাল <<
ব্যাখা:- কবির অস্তিত্ব জুড়ে চিরায়ত গ্রামবাংলার প্রতিচ্ছবি। তার কাব্যিক দৃষ্টিতে কাটা সুপারির রঙ। পা সবুজ বলতে বাংলার সুজলা-সুফলা, শস্য শ্যামলা মাঠকে বুঝানো হয়েছে। আর নখ তীব্র লাল বলতে আকাশের রক্তরাঙা অরুণ আভাকে বুঝানো হয়েছে। অর্থাৎ, মাটি থেকে আকাশে মেলে ধরা বাংলা প্রকৃতির নৈসর্গিক সৌন্দর্য প্রকাশ পেয়েছে কবির কাব্যের মাধ্যমে, কাব্যচেতনার মাধ্যমে।
আরেকটা ব্যাপার। চন্দন হল সুগন্ধি কাঠের গাছ। আর এর ফুল হল, লবঙ্গ (ঝাল-মিষ্টি স্বাদযুক্ত)। এখানে কবি তার কাব্যিক সত্তার বা কবিতাচেতনার মধুরতাকে চন্দনের ডালের সাথে তুলনা করেছেন।
★>> চোখ যে রাখতে নারি এত বন্য ঝোপের ওপরে।
তাকাতে পারি না আমি রূপে তার যেন এত ভয় <<
ব্যাখা:- বাংলা প্রকৃতির সৌন্দর্য কবিকে এতটাই মুগ্ধ করেছে, যে কবির কাব্যচেতনা হয়েছে আরো শক্তিমান। তাই কবি যেন তাকাতে পারেন না ঝোপের ওপরে থাকা পাখিটির দিকে। তার রুপ যেন তাক লাগিয়ে দিয়েছে কবিকে।
★>> যখনি উজ্জ্বল হয় আমার এ চেতনার মণি,
মনে হয় কেটে যাবে, ছিঁড়ে যাবে সমস্ত বাঁধুনি
সংসার সমাজ ধর্ম তুচ্ছ হয়ে যাবে লোকালয়। <<
ব্যাখা:- সৃষ্টির প্রেরণায় কবি চিরকালই উদ্বুদ্ধ হন, উজ্জ্বল হয় তাঁর চেতনার মণি। পৃথিবীর কোনো বিধিবিধান, ধর্মীয় নিয়মকানুন বা লোকালয় তাকে তখন দমিয়ে রাখতে পারে না। তখন সবকিছুই তুচ্ছ হয়ে যায়, এবং কবির কাছে একমাত্র সত্য হয়ে উঠে → চেতনার জগৎ। যে জগৎ তিনি গড়ে তোলেন শব্দ দিয়ে। এখানে এক সুগভীর বিচ্ছিন্নতাবোধ কবিকে আহত করে।
★>> লোক থেকে লোকান্তরে আমি যেন স্তব্ধ হয়ে শুনি
আহত কবির গান। কবিতার আসন্ন বিজয়। <<
ব্যাখা:- "লোক" মানে ইহজগৎ, আর "লোকান্তর" শব্দটির দ্বারা পরজগৎ কে বুঝানো হয়েছে।
কবি বুঝিয়েছেন, কবি সকল প্রকার জীবন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে গিয়েও নিজের কবিতার সার্বভৌমত্ব অর্জন করেন। তাইতো তিনি এ জগৎ থেকে পরবর্তী জগতেও তার কবিতার জয়গান শুনতে পান। তার সৃষ্টিকর্মের বিজয় ই তার বিচ্ছিন্নতাবোধের বেদনাকে প্রশমিত করে।
মূলভাব-
‘লোক-লোকান্তর’ কবির আত্মপরিচিতিমূলক কবিতা। বাস্তব জগতের বিরুদ্ধে পরিবেশের চরে কবি আহত হয়েছেন। তাই তাঁর চেতনার শান্তিকামী পাখিটি লোকালয় থেকে দূরে প্রকৃতির নিবিড় জগতে উড়ে চলে যায়। সেখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য তাকে কবিতাসৃষ্টির প্রেরণায় উদ্বুদ্ধ করে। তাছাড়া তাঁর চোখে, চেতনায়, সর্বাঙ্গে বাংলার গ্রাম ও স্বাধীনতার ভাব মিশে আছে। বাস্তবতার চরে আহত পাখিটি সেখানে গান-কবিতার সুনিশ্চিত বিজয় লক্ষ্য করে, লোক থেকে লোকান্তরে গান গেয়ে যেতে চায়। ওইপ্রকৃতির জগৎটি প্রকৃতপক্ষে কবির অনিষ্ট সাহিত্যের জগৎ।
বহুর্নিবাচনী প্রশ্ন লোক-লোকান্তর
১। আল মাহমুদ কত খ্রিস্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন?
ক. ১৯৩৩
খ. ১৯৩৬
গ. ১৯৬৩
ঘ. ১৯৬৬
২। কবির চেতনা কিসের মতো?
ক. পাখির
খ. নদীর
গ. পাহাড়ের
ঘ. মাঠের
৩। কবির চেতনা পাখির পায়ের রঙ কী ধরণের?
ক. তীব্র লাল
খ. সবুজ
গ. মেটে
ঘ. সুপারি রং
৪। কবি কোথায় চোখ রাখতে পারেন না?
ক. চন্দনের ডালে
খ. চেতনার মণিতে
গ. বন্য ঝোপের ওপর
ঘ. বন্য পানলতায়
৫। কবি লোকান্তরে স্তব্ধ হয়ে কী শুনতে চান?
ক. পাখির গান
খ. বিজয়ের গান
গ. আহত কবির গান
ঘ. চেতনার গান
৬। চন্দনের ফুল কী রকম?
ক. তিক্ত
খ. বিষাক্ত
গ. ঝাল-মিষ্টি
ঘ. মিষ্টি
৭। চন্দনের ডালে কোন পাখি বসে থাকে?
ক. কোকিল
খ. টিয়া
গ. স্বপ্নের পাখি
ঘ. চেতনার পাখি
৮। অরণ্য কেমন?
ক. নীল
খ. সবুজ
গ. হলুদ
ঘ. কালো
৯। কবি কিসের মালা গাঁথতে চান?
ক. বকুল ফুলের
খ. হিজল ফুলের
গ. পুঁথির
ঘ. চিত্রকল্পের
১০। কিসের ভেতর দিয়ে কবিকে উত্তীর্ণ হতে হয়?
ক. যুদ্ধের
খ. দৈন্যের
গ. কষ্টের
ঘ. জীবন সংগ্রামের
১১। কবির মাথার চেতনা পাখির ওপরে কী দোলে?
ক. ফল
খ. ডাল
গ. পানলতা
ঘ. লতাপাতা
১২। কবির চেতনা পাখির নখ কী রঙের?
ক. সুপারি রং
খ. সবুজ রং
গ. খয়েরি রং
ঘ. লাল রং
১৩। কবি প্রকৃতির দিকে তাকাতে ভয় করেন কেন?
ক. ঝোপের কারণে
খ. অন্ধকারের কারণে
গ. বিপদাশঙ্কার কারণে
ঘ. রূপের আতিশয্যের কারণে
১৪। আহত কবির গান বলতে কাকে বোঝানো হয়েছে?
ক. সাদা পাখিকে
খ. বনের ঘুঘুকে
গ. চেতনাপ্রাপ্ত কবিকে
ঘ. আঘাত পাওয়া কবিকে
১৫। কবি সত্যিকার পাখির মতো চন্দনের ডালে বসতে চান কেন?
ক. শখের কারণে
খ. চেতনার কারণে
গ. প্রকৃতিপ্রেমিক
ঘ. স্বপ্নপিপাসু
১৬। ‘লোক-লোকান্তর’ কবিতায় ‘পরাগ’ বলতে বোঝায়—
ক. ফুলের রেণু
খ. সুগন্ধি বস্তু
গ. কাব্যভাষা
ঘ. ফুলের গন্ধ
১৭। আর দুটি চোখের কোটরে কাটা সুপারির রং ‘চোখের কোটরে’ বলতে বোঝানো হয়েছে—
ক. চোখের গর্তে
খ. চোখের মণিতে
গ. দৃষ্টিতে
ঘ. চোখের ভেতরে
১৮। কবির অস্তিত্ব জুড়ে রয়েছে—
ক. চিরায়ত গ্রামবাংলা
খ. সুপারির রং
গ. আধুনিক বাংলা
ঘ. বাংলার অফুরন্ত রং
১৯। ‘নিসর্গ’ বলতে বোঝায়—
ক. অরণ্য
খ. নির্জন
গ. প্রকৃতি
ঘ. স্বর্গীয় স্থান
২০। কবির কাছে সব কিছু তুচ্ছ হয়ে যায়—
ক. অবহেলায়
খ. অহংকারে
গ. চেতনালাভে
ঘ. পৃথিবীর বিধিবিধান
২১। জন্মসূত্রে আল মাহমুদের সঙ্গে নিচের কোন গ্রামটি সম্পর্কিত?
ক. মোড়াইল
খ. পায়রাবন্দ
গ. ঘাটাইল
ঘ. পাহাড়তলি
২২। কবি আল মাহমুদের চেতনা কোনটির সঙ্গে তুলনীয়?
ক. শাদা পাখি
খ. লাল পদ্ম
গ. ঝিনুক
ঘ. সাদা বক
২৩। সাদা পাখিটির পায়ের রঙের সঙ্গে কোনটির মিল রয়েছে?
ক. হলুদ
খ. নীল
গ. সবুজ
ঘ. লাল
২৪। —তার তীব্র লাল। শূন্যস্থানে কোন শব্দটির প্রয়োগ হবে?
ক. নখ
খ. ঠোঁট
গ. পাখা
ঘ. পা
২৫। কবি আল মাহমুদের চেতনা কোনটির সঙ্গে তুলনীয়?
ক. আকাশ
খ. পাখি
গ. বৃক্ষ
ঘ. নদী
২৬। ‘লোক-লোকান্তর’ রচনাটির শিক্ষণীয় বিষয় কী?
ক. প্রকৃতির প্রতি উদ্বুদ্ধ হওয়া
খ. সুগন্ধি কাঠের গাছ সম্পর্কে জানা
গ. নারীর সৌন্দর্য সম্পর্কে অবগত হওয়া
ঘ. বিচ্ছিন্নতা বোধের যন্ত্রণা সম্পর্কে জানা
২৭। ‘লোক-লোকান্তর’ কবিতার মৌল প্রসঙ্গ কী?
ক. গ্রামীণ প্রকৃতি
খ. নিসর্গ উপলব্ধি
গ. আনন্দ প্রকাশ
ঘ. প্রকৃতির রহস্যময় সৌন্দর্যের উপলব্ধি
২৮। ‘লোক-লোকান্তর’ কী জাতীয় রচনা?
ক. ছোটগল্প
খ. উপন্যাস
গ. নাটক
ঘ. আত্মপরিচয়মূলক কবিতা
২৯। ‘ঝোপের ওপরে’ শব্দটির মধ্য দিয়ে যা তুলে ধরা হয়েছে—
ক. জঞ্জাল
খ. সবুজ অরণ্য
গ. সুগন্ধি গাছ
ঘ. প্রকৃতির সৌন্দর্য
৩০। আল মাহমুদের লেখায় নিচের যেটি ফুটে উঠেছে—
i. স্নিগ্ধ শ্যামল প্রকৃতি
ii. প্রশান্ত গ্রাম্যজীবন
iii. যন্ত্রণাদগ্ধ শহুরে জীবন
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii
খ. i ও iii
গ. ii ও iii
ঘ. i, ii ও iii
৩১। আমার চেতনা বলতে কবি আল মাহমুদ যেটি বুঝিয়েছেন—
i. কাব্যসত্তা
ii. কাব্যচেতনা
iii. জাগ্রত সত্তা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii
খ. i ও iii
গ. ii ও iii
ঘ. i, ii ও iii
৩২। মাথার ওপরে-নিচে—বাতাসের তালে দোলে বন্য পানলতা। শূন্যস্থানে যে শব্দটি প্রযুক্ত হবে—
i. নিশাচারী
ii. বনচারী
iii. পথচারী
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii
খ. i ও iii
গ. ii ও iii
ঘ. i, ii ও iii
নিচের উদ্দীপকটি পড়ো এবং ৩৩ ও ৩৪ নম্বর প্রশ্নের উত্তর দাও :
‘চেয়ে দেখি ছাতার মতন বড় পাতাটির নিচে বসে আছে ভোরের দোয়েল পাখি-চারদিকে চেয়ে দেখি পল্লবের স্তূপ।’
৩৩। উদ্দীপকের ভাবের সঙ্গে তোমার পঠিত কোন কবিতার সাদৃশ্য রয়েছে?
ক. লোক-লোকান্তর
খ. ঐকতান
গ. সেই অস্ত্র
ঘ. সাম্যবাদী
৩৪। উদ্দীপকে আলোচ্য কবিতার যে বৈশিষ্ট্যটি ফুটে উঠেছে—
i. প্রকৃতি চেতনা
ii. দেশপ্রেম
iii. নিসর্গপ্রীতি
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii
খ. i ও iii
গ. ii ও iii
ঘ. i, ii ও iii
নিচের উদ্দীপকটি পড়ো এবং ৩৫ ও ৩৬ নম্বর প্রশ্নের উত্তর দাও :
‘আজ সৃষ্টি-সুখের উল্লাসে
মোর মুখ হাসে মোর চোখ হাসে মোর টগবগিয়ে খুন হাসে
আজ সৃষ্টি-সুখের উল্লাসে।’
৩৫। উদ্দীপকের আবহে কোন কবিতার ভাবগত রূপ লক্ষণীয়?
ক. সেই অস্ত্র
খ. লোক-লোকান্তর
গ. ঐকতান
ঘ. আঠারো বছর বয়স
৩৬। উদ্দীপক ও উত্তর সংশ্লিষ্ট কবিতায় যা ফুটে উঠেছে—
i. সৃষ্টির আনন্দ
ii. হৃদয় উচ্ছ্বাস
iii. অফুরন্ত ভাবাবেগ
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii
খ. i ও iii
গ. ii ও iii
ঘ. i, ii ও iii
নিচের উদ্দীপকটি পড়ো এবং ৩৭ ও ৩৮ নম্বর প্রশ্নের উত্তর দাও :
‘কবরী এলোক করে আকাশ দেখার মুহূর্ত
অশেষ অনুভব নিয়ে
পুলকিত সচ্ছলতা।’
৩৭। উদ্দীপকের কবির সঙ্গে কবি আল মাহমুদের সাদৃশ্য কোথায়?
ক. রূপগত
খ. চেতনাগত
গ. আঙ্গিকগত
ঘ. উপস্থাপনাগত
৩৮। উভয় কবির কবিতার চরণে কোন দিকটি ইঙ্গিতবহ হয়েছে?
ক. শব্দবিন্যাসে
খ. রূপকগত
গ. উপমাগত
ঘ. চিত্রকল্প প্রমূর্ত
৩৯। চন্দন গাছের কাঠ কী রকম?
ক. মিষ্টি
খ. ঝাল
গ. বিষাক্ত
ঘ. সুগন্ধযুক্ত
৪০। কবি শব্দ দিয়ে কী গড়ে তোলেন?
ক. শব্দসৌধ
খ. বাক্য
গ. চেতনার রং
ঘ. শব্দব্রহ্ম
উত্তরগুলো মিলিয়ে নাও
১. খ ২. ক ৩. খ ৪. গ ৫. গ ৬. গ
৭. ঘ ৮. খ ৯. ঘ ১০. ঘ ১১. গ ১২. ঘ
১৩. ঘ ১৪. গ ১৫. খ ১৬. গ ১৭. গ ১৮. ক ১৯. গ ২০. গ ২১. ক ২২. ক ২৩. গ ২৪. ক ২৫. খ ২৬. ক ২৭. ঘ ২৮. ঘ ২৯. ঘ ৩০. ক ৩১. ক ৩২. খ ৩৩. ক ৩৪. গ ৩৫. খ ৩৬. ঘ ৩৭. খ ৩৮. ঘ ৩৯. ঘ ৪০. ক
সৃজনশীল প্রশ্ন:-
পলাশে আর আমের ডালে ডালে
সবুজ মাঠে মাঝবয়সী লালে
দন্ড দুই মুক্তি-সুখে জিরায়:
মাটির কাছে সব মানুস খাতক।
একটি গানে গহন স্বক্ষরে।
জানো কি সেই গানের আমি চাতক?
ক.লোক-লোকান্তর কোন জাতীয় কবিতা?
খ.আমার চেতনা যেন একটি সাদা সত্যিকার পাখি -বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
গ.উদ্দীপক ও লোক-লোকান্তর কবিতার সাদৃশ্যপূর্ণ দিকটি ব্যাখ্যা কর ।
ঘ. উক্ত দিক কবিসত্তার প্রকাশ --বিচার কর ।
১ প্রশ্নের উত্তর :-খ.আমার চেতনা যেন একটি সাদা সত্যিকার পাখি -বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
গ.উদ্দীপক ও লোক-লোকান্তর কবিতার সাদৃশ্যপূর্ণ দিকটি ব্যাখ্যা কর ।
ঘ. উক্ত দিক কবিসত্তার প্রকাশ --বিচার কর ।
ক.➤লোক লোকান্তর একটি আত্নপরিচয়মূলক কবিতা ।
খ.➤প্রশ্নোক্ত চরণটির মধ্যে দিয়ে কবির কাব্যবোধ ও কাব্যচেতনার স্বরুপ প্রকাশিত হয়েছে। প্রকৃতির মহা সমারোহে কবি তাঁর কাব্যচেতনাকে আবিস্কার করেছেন একটি সত্যিকার সাদা পাখির অবয়বে। সবুজ অরণ্যে চন্দন -সুগন্ধের স্নিগ্ধতা নিযে তার আর্বিভাব; যা মূলত কবির কাব্যবোধেরই স্মারক। সে কারণে চরণটির রুপকে কবি মূলত তাাঁর কাব্যসত্তার মধুরতম অংশটিকে প্রজ্জ্বল করেছেন।
উপবোক্ত চরণটির মধ্যে কবির কাব্য চেতনার স্বরুপ প্রকাশিত হয়েছে।
গ.➤ লোক লোকান্তর কবিতায় কবিতায় অস্ফুট প্রকৃতির অনিন্দ্য উদ্ভাসনের অংশটিই উদ্দীপকে প্রকট হয়েছে; সেদিক থেকে কবিতা দুটি সাদৃশ্যপূর্ণ লোক লোকান্তর কবিতায় কবি প্রকৃতির সন্নিধানে তারঁ কাব্যবোধকে তুলে ধরেছেন শব্দসৌকর্যের বহুমাত্রিকতায়। সেখানে কবিচেতনা কোনো জড়াশ্রিত অবয়বকে ঘিরে অঙ্কুরিত হয়নি বরং তা আত্নপ্রকাশ করেছে একটি পাখির অবয়বে যা প্রাণপ্রচুর্যেরও প্রতীক।অর্থাৎ কবি প্রকৃতি ও প্রাণকে আশ্রয় করেই নিজেকে মেলে ধরেছেন।যেখানেই তাঁর অবস্থান হোক না কেন , প্রকৃতিই শেষাবধি তাঁর কবিসত্তাকে বাঁচিয়ে তুলেছে। উদ্দীপকের কাব্যাংশে কবির মধ্যে আমরা প্রকৃতির প্রতি টান অনুভব করতে দেখি । তিনি অবচেতন মনেও প্রকৃতির চিরায়ত আহ্বানকে উপেক্ষা করতে পারেননি। কবি হৃদয় এখানে তাঁর পাশের সকল অবয়বকে ভেঙে প্রকৃতির মাঝে আশ্রয় খুঁজেছে। আমরা লোক লোকান্তরের কবির মধ্যেও অনুরুপ বৈশিষ্ট্য লক্ষ করেছি।
ঘ➤উদ্দীপকে উক্ত দিকটি কবি সত্ত্বার প্রকাশ বলে আমি মনে করি।
কবি আল মাহমুদ লোক লোকান্তর কবিতায় তাঁর আত্নচেতনাকে সত্যিকারের সপ্রাণ একটি পাখির মধ্যে খুঁজে পেয়েছেন। প্রাণের মধ্যে প্রকৃতির মধ্যে জীবনের সৃষ্টির মধ্যে তাঁর কাব্যচেতনার বসবাস। কবি এই পাখির অবয়বে তাঁর কাব্যচেতনাকে মূর্ত করে তুলতে চান।তাঁর এই নান্দনিকবোধই তাঁকে কাব্যচেতনায় উদ্ধুদ্ধ করেছে । উদ্দীপকের কবিতাংশেও আমরা লোক লোকান্তর কবিতার প্রতিচ্ছায়া লক্ষ করি। সেখানেও কবি আত্নসত্তাকে প্রকৃতির পরতে পরতে খুঁজে পেয়েছেন । তাই নিজেকে তিনি মুক্ত করতে চেয়েছেন চৈত্ররুপ খরতা থেকে :পেতে চেয়েছেন বসন্তের স্নিগ্ধতা। কবির এই শাশ্বত কাব্যবোধ তাঁর সৃষ্টির নান্দনিক সূত্রকেই আমাদের সামনে উপস্থাপন করে।
উপরোক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে সিদ্ধান্ত নেয়া যায় যে , সপ্রাণ পাখির অস্তিত্বে দুই কবিই নিজের কাব্যের তথা সৃষ্টির নান্দনিকতাবোধকে প্রকাশ করেছেন্ তাই চারপাশের আবদ্ধতা তাঁদের সৃষ্টিকর্মে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি। সেই অবয়বকে ভেঙে তাঁরা আত্নসৌন্দর্যে জারিত হয়ে নান্দনিক কাব্যভাষা র্নিমান করেছেন। এক্ষেত্রে প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথার্থ।
No comments:
Post a Comment