Gallery

Breaking

Monday 27 January 2020

চাষার দুক্ষু



চাষার দুক্ষু প্রবন্ধের মূলভাব:

চাষার দুক্ষু প্রবন্ধটি মূলত তৎকালীন দরিদ্রপীড়িত কৃষকদের দূর্দশার চিত্রটি ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। ভারতবর্ষের কৃষকদের শোচনীয় অবস্থার কথা তুলে ধরেছেন। কিন্তু ভারতবর্ষের সেই কৃষকদের মৌলিক চাহিদা পূরণ করা হতো না। তাই লেখক কৃষকদের করুণ দরিদ্রের জন্য তথাকথিত সভ্যতার নামে একশ্রেনীর মানুষের বিলাসিতাকে দায়ী করেছেন। অধুনিক শিল্প হিসেবে গ্রামীণ অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি তথা কুটির শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখার পরামর্শ দিয়েছেন বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন।

জ্ঞানমূলক প্রশ্ন

রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন
০১। রোকেয়া সাখাওয়াত হোসনের উপন্যাস দুটির নাম কী?
উত্তর:রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের উপন্যাস দুটির নাম হচ্ছে ‘সুলতানার স্বপ্ন’ ও ‘পদ্মরাগ’।
০২।‘মতিচুর’ কার বিখ্যাত গদ্যগ্রন্থ?
উত্তর: ‘মতিচুর’ হচ্ছে রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের বিখ্যাত গদ্যগ্রন্থ?
০৩। রেকেয়ার জীবনাবসান ঘটে কত সালে?
উত্তর: রোকেয়ার জীবনাবাসন ঘটে ১৯৩২ সালে।
০৪।‘কৌপিন’ শব্দের অর্থ কী?
উত্তর: কৌপিন শব্দের অর্থ ল্যাঙ্গট।
০৫।‘এন্ডি’ শব্দের অর্থ কী?
উত্তর: এন্ডি শব্দের অর্থ মোটা রেশমি কাপড়।
০৬।চটকল প্রতিষ্ঠার পর কিসের কদর বেড়ে যায়?
উত্তর: চটকল প্রতিষ্ঠার পর পাটের কদর বেড়ে যায়।
০৭। দারিদ্র্যের সঙ্গে যুঝতে যুঝতে কাদের জীবন শেষ হতো?
উত্তর: দারিদ্র্যের সঙ্গে বুঝতে বুঝতে চাষিদের জীবন শেষ হতো।
০৮।‘চাষার দুক্ষু’ প্রবন্ধটি কিসের মর্মন্তুদ দলিল?
উত্তর:চাষার দুক্ষু প্রবন্ধটি তত্কালীন দারিদ্র্যপীড়িত কৃষকদের বঞ্চনার মর্মন্তুদ দলিল।
০৯। কোন অঞ্চলের কৃষকগণ সবজি সিদ্ধ করে খেত?
উত্তর: রংপুর অঞ্চলের কৃষকগণ সবজি সিদ্ধ করে খেত।
১০।কুটির শিল্পকে ধ্বংস করেছে কে?
উত্তর: কুটির শিল্পকে ধ্বংস করেছে ব্রিটিশ শাসকগোষ্ঠী।
১১। লেখিকা বঙ্গভূমিকে কী হিসাবে আখ্যায়িত করেছেন?
উত্তর: লেখিকা বঙ্গভূমিকে সুজলা-সুফলা হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
১২। বাংলার কার উদরে অন্ন নেই?
উত্তর: বাংলার চাষিদের উদরে অন্ন নেই।
১৩।‘ধান্য তার বসুন্ধরা যার’-উক্তিটি কার?
উত্তর: ‘ধান্য তার বসুন্ধরা যার’ উক্তিটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের।
১৪।বাংলার কৃষকের অতীত কেমন ছিল?
উত্তর: বাংলার কৃষকের অতীত সমৃদ্ধ ছিল।
১৫। ইউরোপের মহাযুদ্ধ পৃথিবীকে কী করেছে?
উত্তর: ইউরোপের মহাযুদ্ধ পৃথিবীকে সর্বস্বান্ত করেছে।
১৬।লেখিকা ছোটবেলায় টাকায় কত সের সরিষার তৈল পাওয়া যেত বলে শুনেছেন?
উত্তর: লেখিকা ছোটবেলায় টাকায় ৮ সের সরিষার তৈল পাওয়া যেত বলে শুনেছেন।
১৭। ‘চাষার দুক্ষু’ প্রবন্ধে কৃষক কন্যার নাম কী?
উত্তর: ‘চাষার দুক্ষু’ প্রবন্ধে কৃষক কন্যার নাম জমিরন।
১৮। কৃষক কন্যা জমিরনের মাথায় তৈল দিতে কোথায় যেত?
উত্তর: কৃষক কন্যা জমিরনের মাথায় তৈল দিতে রাজবাড়িতে যেত।
১৯।কোন অঞ্চলে দুই সের খেসারীর বিনিময়ে কৃষক পত্নী কন্যা বিক্রি করত?
উত্তর: বিহার অঞ্চলে দুই সের খেসারীর বিনিময়ে কৃষক পত্নী কন্যা বিক্রি করত।
২০। সাত-ভায়া গ্রামটি কিসের তীরে অবস্থিত ছিল?
উত্তর: সাত-ভায়া গ্রামটি সমুদ্রতীরে অবস্থিত ছিল।


 চাষার দুক্ষু বহুনির্বাচনী



✿চাষার দুক্ষু
✿ বহুনির্বাচনী প্রশ্ন:
রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন
২২/৭/২০১৮ইং

১। ক্ষেতে ক্ষেতে পুইড়া মরে কে?
ক. চাষি
খ. মহাজন
গ. শ্রমিক
ঘ. চাষির স্ত্রী

২। দেড় শ বছর পূর্বে ভারতবাসী কী ছিল?
ক. অসহায়
খ. বর্বর
গ. দরিদ্র
ঘ. ধনী

৩। প্রাবন্ধিকের মতে কারা নবাবি হালে থাকে?
ক. চাষিরা
খ. চাষির স্ত্রীরা
গ. পাটকল-চটকলের কর্মীরা
ঘ. ধনীরা

৪। 'চাষার দুক্ষু' প্রবন্ধে চাষিদের মধ্যে কোন বিষয়টি ফুটে উঠেছে?
ক. সচেতনতা
খ. প্রতিবাদ
গ. সহ্য ক্ষমতা
ঘ. তীব্র ক্ষোভ

৫। প্রাবন্ধিকের মতে আমাদের বঙ্গভূমি কী রকম?
ক. সুজলা-সুফলা
খ. দুর্দশাগ্রস্ত
গ. শোচনীয়
ঘ. সভ্য

৬। সাত-ভায়া গ্রামটি কিসের তীরে অবস্থিত ছিল?
ক. নদী
খ. পুকুর
গ. সমুদ্র
ঘ. নদ

৭। লর্ড কার্মাইকেল কোন জাতির প্রতিনিধি?
ক. ফরাসি
খ. পাকিস্তান
গ. ভারতীয়
ঘ. ইংরেজ

৮। 'ভারতবাসী এখন জ্ঞান-বিজ্ঞানে অনেক উন্নত'। উদ্দীপকের সঙ্গে 'চাষার দুক্ষু' প্রবন্ধের কিভাবে তুলনা করা যায়?
ক. সমৃদ্ধি বর্ণনায়
খ. সভ্যতা বর্ণনায়
গ. বন্দনা করায়
ঘ. বিশেষ 'কৌশল ধারণ করায়

৯। প্রাবন্ধিকের মতে আজ কার পেটে ভাত নেই?
ক. চাষির
খ. মহাজনের
গ. শ্রমজীবীর
ঘ. শোষকের

১০। প্রাবন্ধিক তাঁর রচনায় চাষির দারিদ্র্যকে প্রাধান্য দিয়েছেন কেন?
ক. সচেতনতা সৃষ্টিতে
খ. গভীর মমত্বে
গ. চাষির প্রতি সুদৃষ্টি দিতে
ঘ. দেশ রক্ষায়

১১। প্রাবন্ধিক প্রবন্ধের শুরুতেই ভারতের সভ্যতা বর্ণনা করেছে কেন?
ক. কৌশল হিসেবে
খ. সুনাম গাইতে
গ. মর্যাদাশীল করতে
ঘ. ভারতীয়রা সভ্য বলে

১২। চাষির উদরে অন্ন নেই কেন?
ক. শোষণের ফলে
খ. শাসনের ফলে
গ. অবহেলায়
ঘ. বঞ্চনার ফলে

১৩। কৃষক কন্যা জমিরন রাজবাড়িতে যেত কেন?
ক. কাজ করতে
খ. আবর্জনা দিতে
গ. চুলে তেল দিতে
ঘ. খাবার আনতে

১৪। চাষিদের সভ্য হওয়া বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
ক. অলস হওয়া
খ. বিলাসী হওয়া
গ. সচেতন হওয়া
ঘ. আধুনিক হওয়া

১৫। চাষির সহ্য শক্তিতে যে বিষয়টি নিহিত-
i. শোষণ
ii. দুর্বলতা
iii. নিঃস্বার্থ
নিচের কোনটি সঠিক
ক. i
খ. i ও ii
গ. i ও iii ঘ. i, ii ও iii

১৬। প্রাবন্ধিকের মতে এখন আমরা কী হয়েছি?
ক. অসভ্য
খ. স্বাধীন
গ. শোষণযুক্ত
ঘ. সভ্য

১৭। কৃষক কন্যা জমিরন চুলে তেল দিতে কোথায় যেত?
ক. জমিদার বাড়িতে
খ. মামার বাড়িতে
গ. রাজবাড়িতে
ঘ. বোনের বাড়িতে

১৮। রংপুর অঞ্চলের চাষীরা কী পরিধান করত?
ক. ধুতি
খ. কৌপিন
গ. লুঙ্গি
ঘ. গামছা

১৯। প্রাবন্ধিকের মতে এই কঠোর মহীতে কে শুধু সহ্য করতে এসেছে?
ক. দরিদ্র
খ. ভূমিহীন
গ. কৃষক
ঘ. শোষিত

২০। প্রাবন্ধিকের মতে শোষিত হওয়ার জন্য কে জন্মগ্রহণ করেছে? ক. বঙ্গবাসী খ. ভারতবাসী গ. চাষি ঘ. দুঃখী ২১। নবাবি হালে থাকা কথাটি 'চাষার দুক্ষু' প্রবন্ধের কাদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য?
ক. পাটকলের কর্মীদের
খ. ব্যবসায়ীদের
গ. কৃষকদের
ঘ. জমিদারদের

২২। 'ধান্য তার বসুন্ধরা যার' উক্তিটি কার?
ক. বেগম রোকেয়া
খ. কাজী নজরুল ইসলাম
গ. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
ঘ. আল মাহমুদ

২৩। হাবীবা অবসর সময়ে নকশি কাঁথা সেলাই করে অতিরিক্ত অর্থ উপার্জন করে। এখানে হাবীবার মধ্যে 'চাষার দুক্ষু' প্রবন্ধের কোন বিষয়টি প্রতিফলিত হয়েছে?
ক. কর্মমুখিতা
খ. সচেতনতা
গ. সমৃদ্ধি চিন্তা
ঘ. অর্থের মোহ

২৪। প্রাবন্ধিক চাষিদের অভাগা বলেছেন যে কারণে-
i. অসচেতন বলে
ii. শোষিত বলে
iii. ভাগ্য স্থির বলে

নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i
খ. i ও ii
গ. ii ও iii
ঘ. i, ii ও iii

২৫। চাষির শরীরে বস্ত্র জোটে না কেন?
ক. শোষণের ফলে
খ. শাসনের ফলে
গ. অসচেতনতার ফলে
ঘ. বৈষম্যের শিকার বলে
২৬। দেড় শ বছর পূর্বে ভারতবাসী অসভ্য বর্বর ছিল কেন?
ক. ঐশ্বর্য ছিল না বলে
খ. কৃষক ছিল বলে
গ. শিক্ষা ছিল না বলে
ঘ. সুবিধাবঞ্চিত ছিল বলে

নিচের উদ্দীপকটি পড়ো এবং ২৭ ও ২৮ নম্বর প্রশ্নের উত্তর দাও :
সারা দিন রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে কৃষকেরা মাঠে সোনার ফসল ফলায়। কিন্তু তার যথার্থ মূল্য তারা পায় না। তাদের শ্রমে সমৃদ্ধি হয় শোষকের আর তারা শূন্য হাতে পড়ে থাকে।
২৭। উদ্দীপকের সঙ্গে তোমার পঠিত কোন রচনার মিল রয়েছে?
ক. চাষার দুক্ষু
খ. আমার পথ
গ. বিড়াল
ঘ. চেতনার অ্যালবাম

২৮। এরূপ মিলের স্বরূপ-
i. শোষণ বর্ণনা
ii. কৃষকের দুঃখ বর্ণনা
iii. কৃষকের সমৃদ্ধি কামনা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i
খ. i ও ii
গ. i ও iii
ঘ. i, ii ও iii
২৯। কত বছর পূর্বে ভারতবাসী অসভ্য বর্বর ছিল?
ক. ১০০ বছর
খ. ১২০ বছর
গ. ১৩০ বছর
ঘ. ১৫০ বছর

৩০। বাঙালি সভ্যতাকে যারা অস্বীকার করে প্রাবন্ধিকের মতে তারা কী?
ক. বেইমান
খ. বিশ্বাসঘাতক
গ. প্রতারক
ঘ. নিমক হারাম

উত্তরগুলো মিলিয়ে নাও
১. ক ২. খ ৩. গ ৪. গ ৫. ক ৬. গ ৭. ঘ ৮. ক ৯. ক ১০. গ ১১. ক ১২. ক ১৩. গ ১৪. খ ১৫. খ ১৬. ঘ ১৭. গ ১৮. খ ১৯. গ ২০. গ ২১. ক ২২. গ ২৩. ক ২৪. ঘ ২৫. ক ২৬. গ ২৭. ক ২৮. খ ২৯. ঘ ৩০. ঘ

সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর

অনুরাধা ও পারুল প্রতিবেশী ও সহপাঠী। অনুরাধা সময় পেলেই স্টার জলসা, জি বাংলা, স্টার প্লাস চ্যানেল দেখে। ঐ সব নাটকের নায়িকাদের স্টাইলে নিজেকে উপস্থাপনে অনুরাধা সদা তৎপর। অনুরাধার বাবা একজন পাট ব্যবসায়ী। ব্যবসায়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে তিনি সর্বস্বান্ত প্রায়। অন্যদিকে পারুল পড়াশোনার পাশাপাশি সেলাই মিশিনে কাজ করে পরিবারকে সাহায্য করে। পড়াশোনা শেষ করে পারুল চাকরির জন্য দৌড়াদৌড়ি না করে উন্নত প্রশিক্ষণ ও ব্যাংক লোন নিয়ে গ্রামে একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করে। গ্রামের মানুষদের স্বপ্ন ও সম্ভাবনার আশ্রয় এখন পারুল ও তার কুটিরশিল্প।

(ক) কৃষক কন্যার নাম কী?
(খ) ‘একটি চাউল পরীক্ষা করিলেই হাঁড়িভরা ভাতের অবস্থা জানা যায়” - কথাটির দ্বারা কী বুঝানো হয়েছে?
(গ) ‘চাষার দুক্ষু’ প্রবন্ধের কোন দিকটি অনুরাধার মধ্যে প্রকাশ পেয়েছে আলোচনা কর।
(ঘ) “স্বাবলম্বী হওয়ার জন্য চাই অন্ধ বিলাসিতার অনুকরণ বাদ দিয়ে দেশীয় শিল্পের সাথে মেধা, শ্রম ও উদ্যোক্তার যৌথ সমন্বয়’ - উদ্দীপক ও তোমার পঠিত প্রবন্ধের আলোকে আলোচনা কর।

উত্তর - ক :
কৃষক কন্যার নাম জমিরন।

উত্তর - খ : সমগ্র ভারতবর্ষের কৃষকদের অর্থনৈতিক অবস্থা জানার জন্য তৎকালীন পূর্ববঙ্গ বা বর্তমানের বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থা জানাটাই যথেষ্ট - এই অর্থে লেখিকা এই উক্তি করেছেন।
তৎকালীন বৃহত্তর ভারতীয় উপমহাদেশের একটি অংশ ছিল বাংলাদেশ। সুপ্রাচীন কাল থেকেই এ অঞ্চলটি সুজলা-সুফলা, শস্য-শ্যামলা ও নদীমেখলা। এ দেশের অর্থনীতি সম্পর্কে জানা মানেই সমগ্র ভারতীয় উপমহাদেশ সম্পর্কে জানা। বাংলাদেশের কৃষকের অবস্থা বড়ই করুণ। তাদের রুগ্ন অবস্থা সবাইকে ব্যথিত করে। রোদ-বৃষ্টিতে সকলের মুখের খাবার আর গায়ের বস্ত্র যোগালেও তাদের পরনে শতচ্ছিন্ন ময়লা কাপড়, উদরে নেই অন্ন। ভারতবর্ষের কৃষকদের সামগ্রিক অবস্থা জানার জন্য তাই বাংলাদেশের অবস্থা জানাটাই অনেক। এ প্রসঙ্গেই লেখিকা উক্ত উক্তিটি করেছেন।

উত্তর - গ : ‘চাষার দুক্ষু’ নামক প্রবন্ধে রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন চাষার দুঃখের জন্য তাদের বিলাসিতাকে অনেকাংশে দায়ী করেছেন। ‘চাষার দুক্ষু’ প্রবন্ধে প্রাবন্ধিক কৃষকের দুঃখ-দুর্দশা ও তার কারণ বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেন, অতীতে ভারতবর্ষে কৃষকদের কোনো অভাব ছিল না- কেন না তখন ঘরে ঘরে এন্ডি কাপড়সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য তারা নিজেরাই বানাত। কিন্তু সভ্যতার করাল গ্রাসে আমাদের মেহনতি শ্রমজীবী মানুষদের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত অনুকরণপ্রিয় বিলাসিতা দেখা দেয়। তারা খেতে না পারলেও টাক মাথা তাজ দিয়ে ঢাকার দিবা স্বপ্ন বোনে। উদ্দীপকের পাট ব্যবসায়ীর কন্যা অনুরাধা। সে সারাক্ষণ আকাশ-সংস্কৃতির ধারক-বাহক। বাবার ব্যবসাতে লাল বাতি জ্বললেও তার স্টার জলসার নায়িকা রূপে হাজির হওয়া চাই, জি বাংলার নায়িকার মতো জীবনযাপনে উপস্থাপন হওয়া চাই। অন্ধ-অনুকরণপ্রিয় বিলাসী জীবন তাকে বাস্তবতার নির্মমতা থেকে স্বাপ্নিক এক পৃথিবীতে নিয়ে যায়। অনুরাধা আমাদের পঠিত ‘চাষার দুক্ষু’ প্রবন্ধের চাষার বউ বা মেয়ের প্রতিচ্ছবি যারা খেতে না পারলেও তাজ দিয়ে মাথার টাক ঢাকতে বদ্ধপরিকর।
উত্তর - ঘ : একটি দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য সকলের আগ্রহ অভিজ্ঞতা সদিচ্ছা আর কর্মস্পৃহা একান্ত জরুরি। চাষার দুক্ষু প্রবন্ধে রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন তৎকালীন কৃষকের দারিদ্র্যপূর্ণ জীবনচিত্র তুলে ধরেছেন। শত বছর পূর্বে আমাদের কৃষক সমাজ ছিল আত্মনির্ভরশীল, স্বয়ংসম্পূর্ণ। আমাদের অন্ন বা বস্ত্রের অভাব ছিল না। নারীরা হেসে খেলে বস্ত্রের অভাব মেটাত, পুরুষেরা গান গেয়ে ধান উৎপাদন করতো, আর মসলিন বানাত। কিন্তু সভ্যতার অন্ধ অনুকরণে কৃষকের অবস্থা শোচনীয়। এই অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য প্রাবন্ধিক দেশী শিল্প বিশেষত নারীসংশ্লিষ্ট শিল্পের পুনরুদ্ধারের ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। তিনি মনে করেন সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য গ্রামে গ্রামে পাঠশালা আর চরকার ব্যাপক প্রচার ও প্রসার দরকার। উদ্দীপকে পারুল তার পরিবার ও প্রতিবেশী এলাকাবাসীকে স্বাবলম্বী করে গড়ে তুলেছেন দেশীয় শিল্পের মাধ্যমে। পারুল বাল্যকাল থেকেই পরিশ্রমী আর স্বাবলম্বী। সেই সাথে শিক্ষা আর উচ্চতর প্রশিক্ষণ তাকে করেছে আজকের অনন্যা। সে উপলব্ধি করেছে ব্যক্তি স্বাবলম্বীর মধ্য দিয়ে সমাজ স্বাবলম্বী হবে। প্রবন্ধে লেখিকা গ্রামীণ শিল্প তথা নারীভিত্তিক যে শিল্পের বর্ণনা দিয়েছেন পারুল এখানে লেখিকার মানসকন্যা। সে স্বার্থক এবং তার আলোয় চারপাশের অন্যদের আলোকিত করেছে। উদ্দীপক ও পঠিত প্রবন্ধের আলোকে আমরা একথা নির্দ্বিধায় বলতেই পারি সাবলম্বী হওয়ার জন্য চাই অন্ধ বিলাসিতার অনুকরণ বাদ দিয়ে দেশীয় শিল্পের সাথে মেধা, শ্রম ও উদ্যোগের যৌথ সমন্বয়। 

No comments: