Gallery

Breaking

Sunday 5 January 2020

তাহারেই পড়ে মনে









তাহারেই পড়ে মনে 


সুফিয়া কামাল 


হে কবি! নীরব কেন-ফাল্গুন যে এসেছে ধরায়,
বসন্তে বরিয়া তুমি লবে না কি তব বন্দনায়?”
কহিল সে স্নিগ্ধ আঁখি তুলি-
“দখিন দুয়ার গেছে খুলি?
বাতাবী নেবুর ফুল ফুটেছে কি? ফুটেছে কি আমের মুকুল?
দখিনা সমীর তার গন্ধে গন্ধে হয়েছে কি অধীর আকুল?”

“এখনো দেখনি তুমি?” কহিলাম “কেন কবি আজ
এমন উন্মনা তুমি? কোথা তব নব পুষ্পসাজ?”
কহিল সে সুদূরে চাহিয়া-
“অলখের পাথার বাহিয়া
তরী তার এসেছে কি? বেজেছে কি আগমনী গান?
ডেকেছে কি সে আমারে? -শুনি নাই,রাখিনি সন্ধান।”
কহিলাম “ওগো কবি, রচিয়া লহ না আজও গীতি,
বসন্ত-বন্দনা তব কণ্ঠে শুনি-এ মোর মিনতি।”
কহিল সে মৃদু মধুস্বরে-
“নাই হ’ল, না হোক এবারে-
আমার গাহিতে গান! বসন্তরে আনিতে ধরিয়া-
রহেনি,সে ভুলেনি তো, এসেছে তো ফাল্গুন স্মরিয়া।”

কহিলাম “ওগো কবি, অভিমান করেছ কি তাই?
যদিও এসেছে তবু তুমি তারে করিলে বৃথাই।”
কহিল সে পরম হেলায়-
“বৃথা কেন? ফাগুন বেলায়
ফুল কি ফোটে নি শাখে? পুষ্পারতি লভে নি কি ঋতুর রাজন?
মাধবী কুঁড়ির বুকে গন্ধ নাহি? করে নি সে অর্ঘ্য বিরচন?”
“হোক, তবু বসন্তের প্রতি কেন এই তব তীব্র বিমুখতা?”
কহিলাম “উপেক্ষায় ঋতুরাজে কেন কবি দাও তুমি ব্যথা?”
কহিল সে কাছে সরি আসি-
“কুহেলী উত্তরী তলে মাঘের সন্ন্যাসী-
গিয়াছে চলিয়া ধীরে পুষ্পশূন্য দিগন্তের পথে
রিক্ত হস্তে। তাহারেই পড়ে মনে, ভুলিতে পারি না কোন মতে।”

 পাঠ আলোচনা

সুফিয়া কামাল বাংলাদেশের বিশিষ্ট্য মহিলা কবি ও নারী আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃৎ।
তাঁর জন্ম ১৯১১ খ্রিস্টাব্দের ২০-এ জুন বরিশালে। তাঁর পৈতৃক নিবাস কুমিল্লায়।
সুফিয়া কামাল ১৯৯৯ খ্রিস্টাব্দের ২০এ নভেম্বর ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন।
কবির পিতার নাম সৈয়দ আবদুল বারী এবং মায়ের নাম সাবেরা বেগম।
যে সময়ে সুফিয়া কামালের জন্ম তখন বাঙালি মুসলমান নারীদের কাটাতে হতো গৃহবন্ধি জীবন।
স্কুল কলেজে পড়ার কোনো সুযোগ তাদের ছিল না। ওই বিরুদ্ধ পরিবেশে সুফিয়া কামালের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার সুযোগ পাননি।
পারিবারিক নানা উত্থান পতনের মধ্যে তিনি স্বশিক্ষায় শিক্ষিত হয়েছেন।
সুফিয়া কামালের উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ হচ্ছে: ‘সাঁঝের মায়া’, ‘মায়া কাজল’, ‘কেয়ার কাঁটা’, ‘উদাত্ত পৃথিবী’ ইত্যাদি।
এছাড়াও তিনি গল্প, ভ্রমণ কাহিনি, প্রবন্ধ ও স্মৃতিকথা লিখেছেন।
বাংলা একাডেমি পুরস্কার, একুশে পদক, নাসির উদ্দীন স্বর্ণপদকসহ বিভিন্ন পদকে ভূষিত হয়েছেন তিনি।

“তাহারেই পড়ে মনে” কবিতাটি ১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দে ‘মাসিক মোহাম্মাদী’ পত্রিকায় প্রথম প্রকাশিত হয়।
এ কবিতায় প্রকৃতি ও মানবমনের সম্পর্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক তাৎপর্যময় অভিব্যক্তি পেয়েছে।
সাধারণভাবে প্রকৃতির সৌন্দর্য মানবমনের অফুরন্ত আনন্দের উৎস।
বসন্ত-প্রকৃতির অপরূপসৌন্দর্য যে কবিমনে আনন্দের শিহরন জাগাবে এবং তিনি তাকে ভাবে ছন্দে সুরে ফুটিয়ে তুলবে সেটাই প্রত্যাশিত।
কিন্তু কবিমন যদি কোন কারণে শোকাচ্ছন্ন কিংবা বেদনা ভারাতুর থাকে তবে বসন্ত তার সমস্ত সৌন্দর্য সত্ত্বেত কবির অন্তরকে স্পর্শ করতে পারবে না।
এ কবিতায় কবির ব্যক্তি জীবনের দুঃখময় ঘটনার ছায়াপথ ঘটেছে।
কবিতাটির আরেকটি লক্ষণীয় বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, এর নাটকীয়তা। গ
ঠনরীতির দিক থেকে একটি সংলাপনির্ভর রচনা।
কবিতার আবেগময় ভাববস্তুর বেদনাঘন বিষণ্নতার সুর এবং সুললিত ছন্দ এতই মাধুর্যমণ্ডিত যে তা সহজেই পাঠকের অন্তর ছুঁয়ে যায়।

হে কবি–কবিভক্ত এখানে কবিকে সম্বোধন করেছেন।
নীরব কেন-উদাসীন হয়ে আছেন কেন? কেন কাব্য ও গান রচনায় সক্রিয় হচ্ছেন না।
ফাগুন যে এসেছে ধরায়-পৃথিবীতে ফাল্গুন অর্থাৎ বসন্তের আবির্ভাব ঘটেছে।
বরিয়া     -বরণ করে।
লবে-নেবে।
কোথা তব নব পুষ্পসাজ-বসন্ত এসেছে অথচ কবি নতুন ফুলে ঘর সাজাননি। নিজেও ফুলের অলংকারে সাজেননি।
অলখ -অলক্ষ। দৃষ্টি অগোচরে।
পাথার-সমুদ্র।
রচিয়া-রচনা করে।
লহ-নাও।
বরিয়া-বরণ করে।
মাধবী-বাসন্তী লতা বা তার ফুল। অর্ঘ্য বিরচন-অঞ্জলি বা উপহার রচনা। প্রকৃতি বিচিত্র সাজে সজ্জিত হয়ে ফুল ও তার সৌরভ উপহার দিয়ে বসন্তকে বরণ করে।
উপেক্ষায় ঋতুরাজে কেন কবি দাও তুমি ব্যথা-কবিভক্ত বুঝতে পারছেন না, কবি যথারীতি সানন্দে বসন্ত বন্দনা না করে তার দিকে মুখ ফিরিয়ে রয়েছেন কেন।
কুহেলি- কুয়াশা।
উত্তরী- চাদর। উত্তরীয়।

বহুুনির্বাচনী 


প্রশ্ন:১ তাহারেই পড়ে মনে কবিতায় উত্তরী শব্দের অর্থ কী ?

সঠিক উত্তর: চাদর

প্রশ্ন:২ শুনি নাই, রাখিনি সন্ধান- কবি কীসের সন্ধান রাখেননি ?
সঠিক উত্তর: বসন্তের

প্রশ্ন:৩ তাহারেই পড়ে মনে কবিতাটির গঠনরীতি কোন বৈশিষ্ট্যের ?
সঠিক উত্তর: নাটকীয়

প্রশ্ন:৪ কবিভক্ত কবির কাছে কিসের মিনতি করেছেন ?
সঠিক উত্তর: কবিকন্ঠে বসন্ত-বন্দনা

প্রশ্ন:৫ তাহারেই পড়ে মনে কবিতায় কোন বিষয়টি উঠে এসেছে ?
সঠিক উত্তর: মানবমন ও প্রাকৃতির যোগসাদৃশ্য

প্রশ্ন:৬ তাহারেই পড়ে মনে কবিতায় কবি গান রচনা না করলেও বসন্ত ঋতু এসেছে কেন ?
সঠিক উত্তর: প্রকৃতির অমোঘ নিয়মে
প্রশ্ন:৭ পুষ্পশূন্য দিগন্তের পথে কে চলে গেছে ?
সঠিক উত্তর: মাঘের সন্ন্যাসী
প্রশ্ন:৮ পারিবারিক নানা উত্থান পতনের মধ্য দিয়ে কে স্বশিক্ষায় শিক্ষিত হয়েছেন ?
সঠিক উত্তর : সুফিয়া কামাল
প্রশ্ন:৯ পলাশের নেশা মাখি চলেছি দুজনে, বাসনার রঙ-এ মিশি শ্যামলে-স্বপনে, কুহু কুহু শোনা যায় কোকিলের কুহুতান, বসন্ত এসে গেছে। উদ্দীপকের সাথে তোমার পাঠ্যবইয়ের কোন কবিতার সাদৃশ্য আছে ?
সঠিক উত্তর: তাহারেই পড়ে মনে
প্রশ্ন:১০ সুফিয়া কামালের স্বামীর নাম কী ?
সঠিক উত্তর: সৈয়দ নেহাল হোসেন
প্রশ্ন:১১ তাহারেই পড়ে মনে কবিতাটি আচ্ছন্ন হয়ে আছে-
সঠিক উত্তর: বিষাদময় রিক্ততার সুর
প্রশ্ন:১২ তাহারেই পড়ে মনে কবিতায় অলখের পাথার বাহিরা তরী তার এসেছে কি ?- চরণটিতে কবির কোন ভাব ফুটে উঠেছে ?
সঠিক উত্তর: উদাসীনতা
প্রশ্ন:১৩ তাহারেই পড়ে মনে কবিতায় কোন বিষয়টি উঠে এসেছে ?
সঠিক উত্তর: মানবমন ও প্রাকৃতির যোগসাদৃশ্য
প্রশ্ন:১৪ শুনি নাই, রাখিনি সন্ধান- কবি কীসের সন্ধান রাখেননি ?
সঠিক উত্তর: বসন্তের
প্রশ্ন:১৫ বাংলাদেশের নারী আন্দোলনের পথিকৃৎ হিসেবে অভিহিত-
সঠিক উত্তর: সুফিয়া কামাল
প্রশ্ন:১৬ দক্ষিণ দুয়ার শব্দটি দ্বারা কবি কিসের আগমনকে জানিয়ে দিয়েছেন ?
সঠিক উত্তর: বসন্তের দক্ষিণা বাতাস
প্রশ্ন:১৭ তাহারেই পড়ে মনে কবিতার অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো-
সঠিক উত্তর: নাটকীয়তা
প্রশ্ন:১৮ নিচের কোন পুরষ্কারটি সুফিয়া কামাল পাননি ?
সঠিক উত্তর: স্বাধীনতা পদক
প্রশ্ন:১৯ বসন্ত-বন্দনা বলতে বোঝানো হয়েছে-বসন্তে-
সঠিক উত্তর: কবিতা লেখা
প্রশ্ন:২০কহিল সে স্নিগ্ধ আঁখি তুলি দক্ষিণ দুয়ার গেছে খুলি ? কে স্নিগ্ধ আঁখি তুলে কথা বলল ?
সঠিক উত্তর: কবি
প্রশ্ন:২১ বসন্তের সৌন্দর্য কবির কাছে অর্থহীন হওয়ার কারণ-
সঠিক উত্তর: প্রিয়জনের মৃত্যু
প্রশ্ন:২২ সংলাপনির্ভর রচনা-
সঠিক উত্তর: তাহারেই পড়ে মনে
প্রশ্ন:২৩ কবি সুফিয়া কামালের পৈতৃক নিবাস কোথায় ?
সঠিক উত্তর: কুমিল্লায়
প্রশ্ন:২৪ ফুল কি ফোটেনি শাখে ? কবি এ জাতীয় প্রশ্ন করেছেন কেন ?
সঠিক উত্তর: উদাসীনতার জন্য
প্রশ্ন:২৫ কুঁড়ি শব্দটির ব্যুৎপত্তি নির্দেশ করা হয়েছে কোনটিতে ?
সঠিক উত্তর: কুঁড়ি>কোরক
প্রশ্ন:২৬ তাহারেই পড়ে মনে কবিতায় কী ফোটার কথা জানতে চেয়েছেন ?
সঠিক উত্তর: আমের মুকুল
প্রশ্ন:২৭ কবিভক্ত কবির কাছে কিসের মিনতি করেছেন ?
সঠিক উত্তর: কবিকন্ঠে বসন্ত-বন্দনা
প্রশ্ন:২৮ পুষ্পুশূন্য দিগন্তের পথে কে চলে গেছে ?
সঠিক উত্তর: মাঘের সন্ন্যাসী
প্রশ্ন:২৯ গঠনরীতির দিক থেকে তাহারেই পড়ে মনে কবিতাটি কী ধরনের ?
সঠিক উত্তর: সংলাপনির্ভর
প্রশ্ন:৩০ তাহারেই পড়ে মনে কবিতাটি কোথায় প্রথম প্রকাশিত হয় ?
সঠিক উত্তর: মাসিক মোহাম্মদী পত্রিকায়
প্রশ্ন:৩১ দক্ষিণ দুয়ার গেছে খুলি ? চরণটি দ্বারা কী বোঝানো হয়েছে ?
সঠিক উত্তর: কবি মনের উদাসীনতা
প্রশ্ন:৩২ কে কবিকে বসন্তের বন্দনায় গীতি রচনা করতে বলেছেন ?
সঠিক উত্তর: কবিভক্ত
প্রশ্ন:৩৩ কুহেলি শব্দটি তাহারেই পড়ে মনে কবিতায় কোন অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে ?
সঠিক উত্তর: কুয়াশা
প্রশ্ন:৩৪ কুহেলী উত্তরী তলে মাঘের সন্ন্যাসী-এখানে কবির অনুভূতি-
সঠিক উত্তর: শীতের রিক্ততায় উদ্ভাসিত হয়েছে
প্রশ্ন:৩৫ গঠনরীতির দিক থেকে তাহারেই পড়ে মনে কোন ধরনের কবিতা ?
সঠিক উত্তর: সংলাপনির্ভর
প্রশ্ন:৩৬ তাহারেই পড়ে মনে কবিতায় ব্যবহৃত মিনতি শব্দটির ব্যুৎপত্তিগত ভাষা-
সঠিক উত্তর: সংষ্কৃত-আরবি
প্রশ্ন:৩৭ তাহারেই পড়ে মনে কবিতায় কবি কেন উম্মনা উদাসীন হয়েছেন ?
সঠিক উত্তর: স্বামীর মৃত্যুর জন্য
প্রশ্ন:৩৮ বসন্ত ঋতুতে কবিকে আচ্ছন্ন করে আছে-
সঠিক উত্তর: শীতের রিক্ততা
প্রশ্ন:৩৯ তাহারেই পড়ে মনে কোন দুয়ার খুলে গেছে ?
সঠিক উত্তর: দক্ষিণ
প্রশ্ন:৪০ তাহারেই পড়ে মনে কবিতায় কবি মৃদু মধু স্বরে কী বলেন ?
সঠিক উত্তর: নাই হলো, না হোক এবারে
প্রশ্ন:৪১ মাধবী শব্দটি তাহারেই পড়ে মনে কবিতায় কী অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে ?
সঠিক উত্তর: বাসন্তী লতা
প্রশ্ন:৪২ পুষ্পশূন্য কোন পথ ?
সঠিক উত্তর: দিগন্তের পথ
প্রশ্ন:৪৩ বাতাবি লেবুর ফুল ফুটেছে কি ?- এখানে কিসের ছায়াপাত ঘটেছে ?
সঠিক উত্তর: কবির উদাসীনতা
প্রশ্ন:৪৪ যদিও এসেছে তবু তুমি তারে করিলে বৃথাই- এখানে তারে বলতে কাকে বোঝানো হয়েছে ?
সঠিক উত্তর: বসন্ত
প্রশ্ন:৪৫ দক্ষিণ দুয়ার কীভাবে খুলে গেছে ?
সঠিক উত্তর: প্রকৃতির নিয়মে খুলেছে
প্রশ্ন:৪৬ তাহারেই পড়ে মনে কবিতার পর্ব-বিন্যাস কীরূপ ?
সঠিক উত্তর: ৮ ও ১০ মাত্রা
প্রশ্ন:৪৭ সমীর শব্দটির প্রতিশব্দ হিসেবে তুমি কোনটি চিহিৃত করবে ?
সঠিক উত্তর: বাতাস
প্রশ্ন:৪৮ তাহারেই পড়ে মনে কবিতাটি সার্থক-
সঠিক উত্তর: ব্যক্তি ও প্রকৃতির তাৎপর্যময় অভিব্যক্তিতে
প্রশ্ন:৪৯ ডেকেছে কি সে আমারে- চরণাংশে কবি কী বোঝাতে চেয়েছেন ?
সঠিক উত্তর: কবি গভীর চিন্তামগ্ন
প্রশ্ন:৫০ তাহারেই পড়ে মনে কবিতায় কবি গান রচনা না করলেও বসন্ত ঋতু এসেছে কেন ?
সঠিক উত্তর: প্রকৃতির অমোঘ নিয়মে
প্রশ্ন:৫১ কহিল সে কাছে সরে আসি- পরের পঙক্তি কোনটি ?
সঠিক উত্তর: কুহেলি উত্তরী তলে মাঘের সন্ন্যাসী
প্রশ্ন:৫২ তাহারেই পড়ে মনে কবিতায় উত্তরী শব্দের অর্থ কী ?
সঠিক উত্তর: চাদর
প্রশ্ন:৫৩ তাহারেই পড়ে মনে কবিতায় কবির মন বিষণ্নতায় আচ্ছন্ন যে কারণে-
সঠিক উত্তর: প্রিয়জন হারানোর শোকে
প্রশ্ন:৫৪ তাহারেই পড়ে মনে কবিতায় কবি কাকে ব্যথা দিয়েছেন ?
সঠিক উত্তর: পাঠক
প্রশ্ন:৫৫ বসন্ত-বন্দনা তব কন্ঠে শুনি- এ মোর মিনতি- এ মিনতি করে-
সঠিক উত্তর: কবিভক্ত
প্রশ্ন:৫৬ কবি সুফিয়া কামালের জন্ম কোন জেলায়?
সঠিক উত্তর: বরিশালে
প্রশ্ন:৫৭ কবি সুফিয়া কামালের জন্ম কোন জেলায়?
সঠিক উত্তর: বরিশালে
প্রশ্ন:৫৮ তাহারেই পড়ে মনে কবিতায় হে কবি বলে কে সম্ভোধন করেছেন
সঠিক উত্তর: কবি ভক্ত
প্রশ্ন:৫৯ তাহারেই পড়ে মনে কবিতায় কবির কাকে মনে পড়ে?
সঠিক উত্তর: মাঘের সন্ন্যাসিকে
প্রশ্ন:৬০ তাহরেই পড়ে মনে কবিতায় কে অর্ঘ্য বিরচন করে?
সঠিক উত্তর: বসন্ত
প্রশ্ন:৬১ কুহেলি শব্দের অর্থ কী?
সঠিক উত্তর : কুয়াশা
প্রশ্ন:৬২ মেঘের সন্ন্যাসি বলতে কাকে বোঝানো হয়েছে?
সঠিক উত্তর: কবি ভক্তের হৃদয়কে
প্রশ্ন:৬৩ লহ শব্দেটি কী অর্থে ব্যাহৃত হয়েছে?
সঠিক উত্তর: নাও
প্রশ্ন:৬৪ তাহারেই পড়ে মনে কবিতায় কবি কোন বিষয়ে তাৎপর্যময় অভিব্যক্তি প্রকাশ করেছেন?
সঠিক উত্তর: প্রকৃতি ও মানবমনের সম্পর্ক




একটি সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর দেওয়া হলো
হিম কুহেলির অন্তর তলে আজিকে পুলক জাগে
রাঙিয়া উঠেছে পলাশ কণিকা মধুর রঙ্গিন রাগে।
আসিবে এবার ঋতুরাজ বুঝি
তারি বাঁশি ওঠে মলয়েতে বাজি
... ... ... ....
... ... ... ....
দূরে সরে গেছে হিম জর্জর
কুয়াশা ঢাকা বেদনা নিথর
মর্মরি ওঠে মধুর রাগিণী বন-নিকুঞ্জ তলে
সুন্দর সে যে হাসিতে তাহার
নিখিল ভুবন ভোলে।
প্রশ্ন:
ক. ‘তাহারেই পড়ে মনে’ কবিতাটি প্রথম কোন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়?
খ. বসন্তের সৌন্দর্য কবির কাছে অর্থহীন কেন?
গ. অনুচ্ছেদের প্রথমাংশের ভাবটি ‘তাহারেই পড়ে মনে’ কবিতায় কার সংলাপে ফুটে উঠেছে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. অনুচ্ছেদে বর্ণিত ঋতুর সঙ্গে ‘তাহারেই পড়ে মনে’ কবিতা ঋতুর দৃষ্টিভঙ্গিগত পার্থক্য রয়েছে—এ উক্তিটির সঙ্গে তুমি কি একমত? তোমার মতের পক্ষে যুক্তি দাও।

উত্তর: ক. ‘তাহারেই পড়ে মনে’ কবিতাটি প্রথম মাসিক মোহাম্মদী পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।
উত্তর: খ. যেকোনো সৌন্দর্য, বিশেষ করে প্রকৃতির সৌন্দর্য মানুষকে আনন্দ দান করে। বসন্তের সৌন্দর্য হলে তো কথাই নেই। কিন্তু স্বামীর অকাল মহাপ্রয়াণে শোকাচ্ছন্ন থাকায় বসন্তের সৌন্দর্য কবির নিকট অর্থহীন।
প্রকৃতি বসন্তের আগমনে ফুলের সাজে সাজলেও, দক্ষিণা হাওয়া বইলেও কবিকে শীতের রিক্ততার বেদনার ছাপ আচ্ছন্ন করে রেখেছে। কবি তাঁর মনের প্রকৃত অবস্থাকে শীতের প্রকৃতিতে বিরাজমান অবস্থার সঙ্গে একটি মিল খুঁজে পাচ্ছেন। তিনি বসন্তের আগমনের আনন্দের পরিবর্তে প্রিয়তম সৈয়দ নেহাল হোসেনের আকস্মিত মৃত্যুর বিষাদ ব্যথায় শীতের করুণ বিদায় বেলায় একাকার করে উপলব্ধি করছেন। বসন্ত তাঁর নিকট অর্থহীন।
উত্তর: গ. অনুচ্ছেদের প্রথমাংশের ভাবটি ‘তাহারেই পড়ে মনে’ কবিতার কবিভক্তের সংলাপের চিত্র ফুটে উঠেছে।
বসন্তের আগমনে গাছে গাছে ফুল ফোটে; মানবমনে শিহরণ জাগে, প্রকৃতি বিচিত্র সাজে সজ্জিত হয়ে ফুল ও তার সৌরভ উপহার দিয়ে বসন্তকে বরণ করে। বসন্তের আগমনে প্রকৃতি ও মানব মনে এক মহোৎসব বিরাজ করে। এর প্রভাবে সবাই প্রভাবিত। কবি ও এর ব্যতিক্রম নন। তবে কেন আজ এই উদাসীনতা তাঁর?
ঋতুরাজ বসন্ত তার রূপ নিয়ে ধরা দেয় প্রকৃতিতে। ফুল ফোটে, পলাশ রাঙায় মধুর রং, পাখি গান গায়, বাঁশি বাজে আনন্দে উদ্বেলিত হয় মানব মন। ‘তাহারেই পড়ে মনে’ কবিতায় কবি ও তাঁর ভক্তদের সংলাপে এমন কথা—
বাতাবী নেবুর ফুল ফুটেছে কি?
ফুটেছে কি আমার মুকুল?
দখিনা সমীর তার গন্ধে গন্ধে
হয়েছে কি অধীর আকুল?”
বসন্তের এতসব আয়োজন সত্ত্বেও কবি আজ বসন্তকে বরণ ও তাঁর জন্য অর্ঘ্য রচনা করতে পারছেন না।—
ফুল কি ফোটে নি শাখে?
পুষ্পারতি রভে নি কি ঋতুর রাজন?
মাধবী কুঁড়ির বুকে গন্ধ নাহি?
করে নি সে অর্ঘ্য বিরচন?”
কেননা, তাঁর সাহিত্য প্রেরণার প্রিয় ব্যক্তির বিয়োগব্যথার কথা কোনোভাবেই ভুলতে পারছেন না। বসন্তের পরিবর্তে তিনি আজ শীত ঋতুকেই তাঁর ব্যথার সাদৃশ্য খুঁজে পাচ্ছেন।
উত্তর: ঘ. অনুচ্ছেদে বর্ণিত ঋতুর সঙ্গে ‘তাহারেই পড়ে মনে’ কবিতার ঋতুর দৃষ্টিভঙ্গিতে পার্থক্য রয়েছে। কবি সুফিয়া কামালের ‘তাহারেই পড়ে মনে’ কবিতায় বসন্তের আগমনের আনন্দে উদ্বেলিত হওয়ার পরিবর্তে প্রকাশ পেয়েছে শীতের রিক্ততার বেদনার সুর। উদ্দীপকের কবিতাংশের সঙ্গে এ কবিতার দৃষ্টিভঙ্গিতে পার্থক্য বেশ স্পষ্ট।
অনুচ্ছেদের সঙ্গে ‘তাহারেই পড়ে মনে’ কবিতার চেতনাগত ও আবেগগত পার্থক্য বেশ লক্ষণীয়। ‘তাহারেই পড়ে মনে’ কবিতায় ঋতুরাজ বসন্তের প্রতি কবির আনন্দবিমুখতার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। যেখানে কবি বসন্তকে বরণ করার নানা আয়োজনে ব্যস্ত থাকবেন, সেখানে তিনি নীরব-নিশ্চুপ। ভক্তদের অনুরোধেও এবার তিনি কোনো প্রকার সাড়া দিচ্ছেন না।
কবি শুধু কি বসন্তের ব্যাপারে উদাসীন? তা নয়, বরং কবির ভাবনা সম্পূর্ণ বিপরীত। কবির ভাবনা কবিতায়—
“কুহেলি উত্তরী তলে মাঘের সন্যাসী—
গিয়াছে চলিয়া ধীরে পুষ্পশূন্য দিগন্তের পথে
রিক্ত হস্তে। তাহারেই পড়ে মনে,
ভুলিতে পারি না কোন মতে।”
অনুচ্ছেদের কবিতায় আমরা বসন্তের আগমনের জয়গান এবং প্রকৃতিতে যে আনন্দ ও সৌন্দর্যের সমারোহ তাই এখানে মুখ্য হয়ে ওঠে। শীতের জীর্ণতা ভেদ করে বসন্ত এসে প্রকৃতিতে মনোরম সাজ ও মধুর রাগ বিরাজ করছে। উভয় কবিতায় বসন্ত বিষয়বস্তু হলেও ‘তাহারেই পড়ে মনে’ কবিতায় ব্যক্ত হয়েছে বসন্তের আনন্দের মাঝে শীতের রিক্ততার বিরাজ। অন্যদিকে অনুচ্ছেদের কবিতাংশে বসন্তের জয়গান, প্রাণের আবেগের বহিঃপ্রকাশ ও প্রকৃতি জগতের সৌন্দর্য ও সৌরভের সমাহার বিস্তৃত হয়েছে। বসন্ত মানেই প্রাণের ঋতু। যেখানে আছে নবযৌবনের ছোঁয়া। শীতের পুরোনো জীর্ণতাকে শীর্ণ করে নতুন প্রাণের আবেগে মেতে ওঠার মধ্যেই বসন্তের সার্থকতা। তবে ক্ষেত্রবিশেষে এর ব্যতিক্রমও যে হয় না, তা নয়। কবির চেতনায় বসন্ত এবার অন্যভাবে ধরা পড়েছে। বসন্তে এবার তিনি শীত ঋতুতেই তাঁর হূদয়ের আর্তির সাযুজ্য খুঁজে পেয়েছেন। এভাবে বসন্ত ও ‘তাহারেই পড়ে মনে’ কবিতার বসন্তের মিল ও অমিল পাওয়া যায়।


এবারে কিছু প্রশ্ন ও উত্তরঃ

১. ‘তাহারেই পড়ে মনে’ কবিতায় ‘কোথা তব পুষ্পসাজ?’—এ চরণটিতে ‘পুষ্পসাজ’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
ক. পুষ্পের অলংকার খ. পুষ্পাঞ্জলি
গ. বাগানে নতুন ফুলের সমাহার
ঘ. নতুন ফুলে ঘর সাজানো

২. ‘তাহারেই পড়ে মনে’ কবিতার বিশেষ লক্ষণীয় বৈশিষ্ট্য কী?
ক. সংলাপপ্রিয়তা খ. নাটকীয়তা
গ. শোকাচ্ছন্নতা ঘ. উদাস ভাবময়তা

৩. ‘তাহারেই পড়ে মনে’ কবিতাটি কী দ্বারা আচ্ছন্ন হয়ে আছে?
ক. বসন্তের সৌন্দর্যের বর্ণনা খ. শীতের রিক্ততা
গ. কবি ও কবিভক্তের সংলাপ
ঘ. বিষাদময় রিক্ততার সুর

৪. ‘তাহারেই পড়ে মনে’ কবিতায় ব্যবহূত ‘বারিয়া’ শব্দটির অর্থ কী?
ক. গ্রহণ করে খ. অভিনন্দন নিয়ে
গ. বরণ করে ঘ. স্বাগত জানিয়ে

৫. ‘তাহারেই পড়ে মনে’ কবিতায় ‘কোথা তব পুষ্পসাজ?’—এ চরণটিতে ‘পুষ্পসাজ’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
ক. পুষ্পের অলংকার খ. পুষ্পাঞ্জলি
গ. বাগানে নতুন ফুলের সমাহার
ঘ. নতুন ফুলে ঘর সাজানো

৬. ‘তাহারেই পড়ে মনে’ কবিতার বিশেষ লক্ষণীয় বৈশিষ্ট্য হলো—
ক. সংলাপপ্রিয়তা খ. নাটকীয়তা
গ. শোকাচ্ছন্নতা ঘ. উদাস ভাবময়তা

৭. ‘উত্তরী’ শব্দের অর্থ কী?
ক. চাদর খ. গামছা গ. ওড়না ঘ. কাপড়

৮. ‘তাহারেই পড়ে মনে’ কবিতার উল্লিখিত ‘অলস’ শব্দের অর্থ কী?
ক. অন্যমনা খ. অলক্ষ গ. প্রত্যক্ষ ঘ. লক্ষহীন

৯. ‘তাহারেই পড়ে মনে’ কবিতায় কবি কাকে ভুলতে পারছেন না?
ক. প্রিয়জনকে খ. শীত ঋতুকে
গ. হারানো স্মৃতিকে ঘ. মাঘের সন্নাসীকে

১০. ‘মনে পড়ে আজ সে কোন জনমে বিদায় সন্ধ্যাবেলা আমি দাঁড়ায়ে রহিনু, এপাড়ে, তুমি ওপারে ভাসালে ভেলা’
উদ্দীপকের ভাবের সঙ্গে কবির ভাবের মিল কোথায়—
ক. ওগো, কবি অভিমান করেছ কি তাই?
খ. তাহারেই পড়ে মনে ভুলিতে পারি না কোন মতে
গ. নীরব কেন ফাগুন যে এসেছে ধরায়
ঘ. বসন্ত-বন্দনা তব কণ্ঠে শুনি-এ মোর মিনতি

১১. ‘এখনো দেখনি তুমি?’—এখানে ‘নি’ কী হিসেবে ব্যবহূত হয়েছে?
ক. ক্রিয়া বিশেষণ খ. না-বাচক ক্রিয়া বিশেষণ
গ. বিশেষণ ঘ. সর্বনাম

১২. ‘তাহারেই পড়ে মনে’ কবিতায় মাঘের সন্নাসী কোন বেশে পুষ্পশূন্য দিগন্তের পথে চলে গিয়েছে?
ক. রিক্ত হস্তে খ. অশ্রুভেজা নয়নে
গ. মলিন বদনে ঘ. বিষণ্ন মনে

১৩. ‘মাধবী’ শব্দটি দ্বারা ‘তাহারেই পড়ে মনে’ কবিতায় কোন ফুলকে বোঝানো হয়েছে?
ক. জবা খ. শিউলি গ. বাসন্তীলতা ঘ. অপরাজিতা

১৪. ‘তার ব্যক্তিজীবনে ও কাব্যচর্চার ক্ষেত্রে নেমে আসে এক দুঃসহ বিষণ্নতা’—কবির এই বিষণ্নতার কারণ কী?
i. উৎসাহদাতা স্বামীর আকস্মিক মৃত্যু
ii. শীতের করুণ বিদায়
iii. সাহিত্য সাধনার প্রেরণা-পুরুষকে হারানো
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. ii ও iii
গ. i ও iii ঘ. i, ii ও iii.

১৫. ‘তাহারেই পড়ে মনে’ কবিতায় ‘নীরব কেন’ বলতে বোঝায়—
(i) কবি উদাসীন হয়ে আছেন কেন
(ii) কবি কেন বসন্তকে সম্বোধন করেছেন
(iii) কবি কেন কাব্য ও গান রচনায় সক্রিয় হচ্ছেন না
নিচের কোনটি সঠিক?
(ক) i (খ) i ও ii (গ) i ও iii (ঘ) ii ও iii

নিচের উদ্দীপকটি পড়ে ১৬ ও ১৭ নং প্রশ্নের উত্তর দাও:
শ্যামল-কাজল বন আমার ভালো লাগে
তবে আমারও প্রতিজ্ঞা আছে অনেক
যেতে হবে বহুদূর—ঘুমিয়ে পড়ার আগে
যেতে হবে বহুদূর—ঘুমিয়ে পড়ার আগে

১৬. অনুচ্ছেদের ‘শ্যামল-কাজল বন’ ‘তাহারেই পড়ে মনে’ কবিতার কোন ঋতুর রূপক?
(ক) শরৎ (খ) হেমন্ত (গ) শীত (ঘ) বসন্ত

১৭. অনুচ্ছেদের মূলভাব নিচের কোন চরণে প্রতিফলিত হয়েছে?
(ক) রহেনি সে ভুলেনি তো, এসেছে ফাগুনে
(খ) তাহারেই পড়ে মনে, ভুলিতে পারি না কোন মতে,
(গ) বসন্ত বন্দনা তব কণ্ঠে শুনি এ মোর মিনতি
(ঘ) তরী তার এসেছে কী বেজেছে কী আগমনী গান।


উত্তর:
 ১. ঘ, ২. খ ৩. ঘ ৪. গ ৫. ঘ ৬. খ ৭. ক ৮. খ ৯. খ ১০. খ ১১. খ ১২. ক ১৩. গ ১৪. গ  ১৫. গ, ১৬. ঘ, ১৭. খ।

No comments: